ঋতু পরিবর্তনে শিশুর ডায়রিয়া : প্রয়োজন সচেতনতা

ঋতু পরিবর্তনে শিশুর ডায়রিয়া : প্রয়োজন সচেতনতা

ঋতু পরিবর্তনে শিশুর ডায়রিয়া : প্রয়োজন সচেতনতা

দ্বিতীয় পর্ব

মুহাম্মদ ফয়সুল আলম : ডায়রিয়াজনিত রোগের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে রোটা ভাইরাস। এ রোগে আক্রান্ত শিশুদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে না পারলে মৃত্যু হতে পারে। রোটা ভাইরাস হচ্ছে নবজাতক ও শিশুদের ডায়রিয়াজনিত রোগ ও পানিশূন্যতার প্রধান কারণ। আক্রান্ত হওয়ার ২-৩ দিন পর সাধারণত এ রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। রোটা ভাইরাসের সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা না থাকলেও পানিশূন্যতা রোধে বারবার পানি খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।

খাবার ও পানির মাধ্যমে এর জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। রোটা ভাইরাস নিয়ে সর্বশেষ গবেষণায় আরো দেখা যায়, ডায়রিয়াজনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এবং ৬ থেকে ১১ মাস বয়সি শিশুর প্রায় ৫০ শতাংশ রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত। ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিয়োলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চের (আইইডিসিআর)’র তথ্যানুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডায়রিয়াজনিত অন্যান্য রোগ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেলেও বাংলাদেশে রোটা ভাইরাসের হুমকি রয়েছে এখনো অনেক বেশি।

ডায়রিয়া সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। এর ফলে সৃষ্ট সবচেয়ে বড়ো জটিলতা হলো পানিশূন্যতা। বারবার পায়খানা হয় বলে শিশু দুর্বল হয়ে পড়ে, এমনকি এতে শিশু মারাও যেতে পারে। সাধারণত দূষিত খাবার ও পানি, রোগজীবাণু, কৃমির মাধ্যমে ডায়রিয়ার জীবাণু ছড়ায়। অপরিষ্কার হাত, গ্লাস, চামচ, বাসনপত্র বা সচরাচর ব্যবহৃত অন্যান্য জিনিসপত্র, মল, মাছি ইত্যাদির দ্বারা এ জীবাণু বাহিত হতে পারে।

ডায়রিয়া সাধারণত ৩ ধরনের হয়ে থাকে। তীব্র ডায়রিয়া, দীর্ঘমেয়াদি ডায়রিয়া, আমাশয় বা ডিসেন্ট্রি। কতগুলো রোগজীবাণু খাদ্যনালিতে প্রবেশ করে ডায়রিয়া ঘটায়। এগুলো রোটাভাইরাস, ই-কোলাই, সিগেলা, ভিবরিও কলেরা, প্যারাসাইট-এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকা ও জিয়ারডিয়া প্রভৃতি।

ছোটো শিশুদের পায়খানা বড়োদের মতোই রোগ ছড়াতে পারে, বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা আরও বেশি। স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা তৈরি করতে হবে এবং বাড়ির ছোটো-বড়ো সবাইকে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে মলত্যাগে অভ্যস্ত করতে হবে। ডায়রিয়া এড়াতে পরিবারের সবাইকে ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে। শিশুকে খাওয়ার আগে, পায়খানা করার পর অবশ্যই হাত সাবান দিয়ে ধুতে হবে। শিশুর পায়খানা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধোয়াতে হবে এবং পরবর্তীতে নিজে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সুস্থ এবং স্বাস্থ্যসম্মত জীবনের অন্যতম অনুষঙ্গ। শিশুর ডায়রিয়া প্রতিরোধে পরিচ্ছন্নতা তাই আবশ্যিক। আর এক্ষেত্রে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।

০৬.১১.২০১৮

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *