একমাত্র ইসলামি শিক্ষাই পারে মানুষকে মানবিক গুণাবলিতে সুসজ্জিত করতে : আল্লামা মাসঊদ

একমাত্র ইসলামি শিক্ষাই পারে মানুষকে মানবিক গুণাবলিতে সুসজ্জিত করতে : আল্লামা মাসঊদ

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : পৃথিবীতে একমাত্র ইসলামি শিক্ষাই মানুষকে মানবিক গুণাবলিতে সুসজ্জিত করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান, শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম, শাইখুল ইসলাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।

তিনি বলেছেন, শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষকে মানবিক গুণাবলিতে সুসজ্জিত করা। তাই শৈশব থেকেই শিশুর বিদ্যার্জনের দিকে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। আর একথা প্রমানিত যে, ইসলামি শিক্ষা ছাড়া আর কোনো শিক্ষাব্যবস্থাই মানুষকে মানবিক বৈশিষ্ট্য তথা প্রেম-ভালোবাসা, মায়া-মুহাব্বাত, স্নেহ-মমতা, সহানুভূতি-সহমর্মিতার মতো আবশ্যকীয় মানবিক গুণাবলিতে সুসজ্জিত করতে পারেনি। ইসলাম ব্যতিত সব শিক্ষাব্যবস্থা এক্ষেত্রে চরমভাবে ব্যার্থ হয়েছে।

শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইকরা ঝিল মসজিদ কমপ্লেক্সে জুমার বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।

আমাদের দেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা আদর্শ মানুষ বানাতে অক্ষম মন্তব্য করে আল্লামা মাসঊদ বলেন, একজন আদর্শ মানুষ গড়তে যে শিক্ষার প্রয়োজন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় এর ছিটেফোঁটাও নেই। ফলে সমাজে আদর্শ মানুষের পরিবর্তে দিন দিন খারাপ মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষিত হয়ে সমাজ দরদি মানুষ সৃষ্টি হচ্ছে না, বরং দুর্নীতিবাজ, চোর-বাটপারের সংখ্যা অভাবনীয় হারে বেড়ে চলেছে। এজন্য আমাদের দেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থাই দায়ী।

বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা একদল পঁচা মানুষ তৈরি করছে। এ শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষিত হয়ে মানুষ নামে কিছু অমানুষ তৈরি হচ্ছে। তাই সময় থাকতেই এ শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। এ পর্যন্ত সব সরকারই শিক্ষাকাঠামো ঠিক করতে ব্যার্থ হয়েছে। কোনো সরকারই সফলভাবে কাজ করতে পারেনি। তাই বর্তমান সরকারের প্রতি বিশেষ আহ্বান জানাচ্ছি, সময় থাকতেই বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজান। অন্যথায় আগামীতে আরও খারাপ দিন অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।

তিনি বলেন, ইসলামি শিক্ষা কেবল যে মুসলমানদের জন্যই বিষয়টি এমন নয়। ইসলামি শিক্ষা একজন অমুসলিমকেও মানবিক গুণাবলিতে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করতে পারে। একজন শিক্ষার্থী যে ধর্মের অনুসারীই হোক, আদর্শ মানুষ বিনির্মানে ইসলামি শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। তাই শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামি শিক্ষা এড়িয়ে যাওয়া, এটা শুধু মুসলিম জাতি হিসেবেই লজ্জাজনক নয়, বরং জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আদর্শ মানুষ গড়ে তোলার রাস্তাকে বন্ধ করে দেওয়ার সমান।

আরও পড়ুন: কিশোর গ্যাং দমনে আলেমদের কাজ করতে হবে : মাওলানা মাকনুন

জেনারেল শিক্ষার সাথে ধর্মীয় শিক্ষার সমন্বয় ঘটানোই ‘ইকরা বাংলাদেশ স্কুলের’ একমাত্র লক্ষ্য জানিয়ে আল্লামা মাসঊদ বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশের জেনারেল শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষা একেবারে উপেক্ষিত, আবার মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থায় জেনারেল সাবজেক্টগুলো পড়ানো হয় না। এ সমস্যার কথা মাথায় রেখে ‘ইকরা বাংলাদেশ স্কুল’ তার যাত্রা শুরু করে এবং সাফল্যের সাথে এগিয়ে চলছে। এখানে একজন ছাত্র হাফেজ-মাওলানা হওয়ার পাশাপাশি একজন ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারও হতে পারেন।

আলহামদুলিল্লাহ এই স্কুল থেকে অনেকেই ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করছেন। অনেকেই আইনজীবী হয়ে মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়াচ্ছেন। সর্বোপরি, একজন আদর্শ মানুষ গড়তে ‘ইকরা বাংলাদেশ স্কুল’ বদ্ধপরিকর। তাই আসুন আমরা এ শিক্ষাব্যবস্থাকে ছড়িয়ে দেই। আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের ‘ইকরা বাংলাদেশ স্কুলের’ মতো শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষিত করে আদর্শ দেশ গড়তে সাহায্য করি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *