একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এরশাদের সংশয়

একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এরশাদের সংশয়

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোটের মহাসমাবেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত এ সমাবেশে তিনি বলেন, ‘আমি দেশবাসীর উদ্দেশে কিছু বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। নির্বাচন নিয়ে এখন অনেক সংশয় রয়েছে। নির্বাচন কখন হবে জানি না।’ একটি দল ৭ দফা দিয়েছে (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট)। সরকার তা মানতে রাজি নয়। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী মানা সম্ভব নয়। এ অবস্থার মধ্যে আগামী দিনগুলো স্বচ্ছ দিন বলে মনে হয় না আমার।’

আজ ২০ অক্টোবর শনিবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোটের সমাবেশে এরশাদ এ কথা বলেন। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশ থেকে নেতা–কর্মীদের ঢাকায় এনে জাতীয় পার্টি এ সমাবেশ করে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা বলেছি, জোটগতভাবে ৩০০ আসনে আমরা নির্বাচন করব।আমরা জাতীয় পার্টি সব সময় নির্বাচন করেছি। আজও নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। তবে দেশের স্বার্থে নতুন মেরুকরণ হতে পারে।“

তিনি বলেন, “নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে জাতীয় পার্টি অবশ্যই ক্ষমতায় আসবে। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা চাই।”

নির্বাচন ঘিরে জাতীয় পার্টির গণসংযোগ এবং প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ চলার কথা জানিয়ে এরশাদ বলেন, “জোটের শরিকরা তাদের প্রার্থীর তালিকা দিয়েছেন। তবে আমি বলব, এখানে দলের চেয়ে প্রার্থীর যোগ্যতাই বেশি প্রাধান্য পাবে।”

নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘বর্তমান সংসদে যারা আছে, সব দলের সমন্বয়ে সরকার গঠন করতে হবে।’

এরশাদ বলেন, ‘সুশাসনের লক্ষ্যে ও জাতির মুক্তির পথে’ নতুন করে ১৮ দফা প্রণয়ন করেছি। এটাই জাতির ও জাতীয় পার্টির একমাত্র মুক্তির পথ। দাবিগুলোর মধ্যে আছে প্রাদেশিক সরকার গঠন, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন, পূর্ণাঙ্গ উপজেলা পদ্ধতির সংস্কার, সংসদে সংখ্যালঘুদের জন্য নির্দিষ্ট আসন সংরক্ষণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, ধর্মীয় মূল্যবোধ সংরক্ষণ, সন্ত্রাস দমনে কঠোর ব্যবস্থা, সড়কে নিরাপত্তা, শিক্ষাপদ্ধতির সংস্কার প্রভৃতি।

নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে এরশাদ বলেন, এ মাসের মধ্যেই জাতীয় পার্টির পার্লামেন্টারি বোর্ড গঠন হবে। প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে। সম্মিলিত জাতীয় মহাজোটের শরিকদের প্রার্থী তালিকা দেওয়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, দলের চেয়ে প্রার্থীর যোগ্যতা বেশি হতে হবে।

নব্বইয়ের পর অনুষ্ঠিত প্রতিটি নির্বাচন ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ হয়েছে বলে মন্তব্য করে সাবেক সামরিক শাসক এরশাদ আবার ক্ষমতায় গেলে নির্বাচন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি দেন।

তিনি বলেন, “আমরা ক্ষমতায় এসে প্রাদেশিক সরকার করতে চাই। আমরা প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণ করতে চাই। আমরা পূর্ণাঙ্গ উপজেলা পরিষদ গঠন করতে চাই। “

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া এই মহাসমাবেশ মঞ্চে এরশাদের পাশে ছিলেন পার্টির সিনিয়র কো চেয়ারম্যান সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ এবং কো চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

এছাড়া জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারসহ প্রেসিডিয়াম সদস্যরা এবং জোটের শরিক বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, জাতীয় ইসলামী মহাজোটের নেতারাও সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এরশাদের বক্তব্যের পর সমাবেশ শেষ হয়। এর আগে সকাল ১০টার আগে থেকেই বড় আকারের লাঙ্গল প্রতীক, এরশাদের প্রতিচ্ছবিসহ জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে মাঠ ভরে গিয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনের রাস্তা পর্যন্ত মানুষ ছড়িয়ে পড়ে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *