নিজস্ব প্রতিবেদক : ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাওয়া গেলেও পার্বত্য তিন জেলার মানুষ এখনো মশাবাহিত এ রোগের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে। ২৫ এপ্রিল বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসের আগে মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য উঠে আসে।
জাতীয় ম্যালেরিয়া ও এডিস মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার এম এম আক্তারুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে নিজের উপস্থাপনায় বলেন, গত বছর দেশে যে ২৯ হাজার ২৪৭ জনের ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার তথ্য নথিভুক্ত হয়েছে, তাদের ৯৩ শতাংশই পার্বত্য তিন জেলা বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির বাসিন্দা।
সীমান্তবর্তী দুর্গম পাহাড়ি এলাকা, বৃষ্টিপাতের আধিক্য এবং বনাঞ্চালবেষ্টিত হওয়ায় সেখানে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে ততটা সাফল্য পাওয়া যায়নি বলে জানান আক্তারুজ্জামান।
তবে গত দশ বছরে সারা দেশে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে বড় ধরনের সাফল্য আসার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, গত বছর দেশে মোট ১৩ জন ম্যালেরিয়ায় মারা গেছেন। ২০০৮ সালের তুলনায় ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুহার কমেছে প্রায় ৯২ শতাংশ; আর আক্রান্তের হার কমেছে ৬৫ শতাংশ।
ম্যালেরিয়ার প্রধান লক্ষণ কাঁপুনি দিয়ে তীব্র জ্বর। সঙ্গে মাথাব্যথা, বমি এবং ডায়রিয়াও হতে পারে। স্ত্রী এনোফিলিস মশার মাধ্যমে ম্যালেরিয়া জীবাণু ছড়ায়। রোগীর দেহের রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ম্যালেরিয়া সনাক্ত করা যায়। ২০১৬ সালে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে ছিলেন; ওই বছর ৯১টি দেশে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের ঘটনা ছিল ২১ কোটি ৬০ লাখ, আগের বছরের তুলনায় যা ৫০ লাখ বেশি।
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশের ৫১টি জেলায় গত কয়েক বছরে কারও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার খবর আসেনি। বাকি ১৩টি জেলার মধ্যে আটটি জেলায় সামান্য এবং দুটি জেলায় আরও কম রোগী পাওয়া যায়।আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালে ম্যালেরিয়ামুক্ত বাংলাদেশ গড়া। ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে এ রোগপ্রবণ এলাকার মানুষের মধ্যে ৯১ লাখ ৩০ হাজার বিশেষ ধরনের মশারি বিতরণের কথা জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। জাতীয়ভাবে এবারের ম্যালেরিয়া দিবসের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে ম্যালেরিয়া নির্মূলে প্রস্তুত আমরা।