এশিয়া কাপে বাংলাদেশের টিকে থাকার লড়াই আজ

এশিয়া কাপে বাংলাদেশের টিকে থাকার লড়াই আজ

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সেরা স্মৃতি শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। ওদের বিপক্ষেই এই ফরম্যাটে এসেছিল সর্বোচ্চ ২১৫ রান। ওদের সঙ্গেই এসেছিল এই ফরম্যাটের সেরা জয়টাও। তবে নিদাহাস ট্রফির সেমিফাইনালের ওই জয় আজ বহুদূরের পথ। তা থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়ার নেই কিছুই। তাই সামনে শ্রীলঙ্কাকে পেয়ে খুশি হওয়ারও কিছু নেই। বরং এশিয়া কাপের স্বপ্ন কীভাবে জিইয়ে রাখা যায় এটাই মূল লক্ষ্য বাংলাদেশের। সাকিব আল হাসানদের চিন্তাটা এখন নিজেদের নিয়েই। যে ভাবনা নিয়ে এশিয়া কাপে যাওয়া তার কিছুই অর্জিত হয়নি। আজ বাঁচামরার লড়াইয়ে যদি কিছু হয় তবুও সফল ধরা হবে বাংলাদেশকে। তবে প্রশ্ন এটাই এমন কিছু কি আজ সত্যি হবে, না আরেকটি ব্যর্থতা মাথায় নিয়ে আগেভাগে টুর্নামেন্ট শেষ করতে হবে।

আজকের ম্যাচ দুদলের জন্যই বাঁচামরার। একমাত্র বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হলে বাংলাদেশের সুপার ফোরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। রানরেটে যে এগিয়ে সাকিবরা। কিন্তু দুবাইতে বৃষ্টি হয় না বললেই চলে। তাই জিতেই সুপার ফোর নিশ্চিত করতে হবে বাংলাদেশকে। আর এ জায়গাতেই এক বিন্দুতে দুই দল। পরের পর্বে যেতে হলে দুই দলেরই জয় দরকার। সংবাদ সম্মেলনে আসা খালেদ মাহমুদ সুজন জানালেন এমন ম্যাচে লড়াইটা ব্যাট-বলের চেয়েও বেশি হয় চাপ হজম করার, ‘কাল চাপের ম্যাচ। যে চাপটা নিতে পারবে তার জন্য জয় আসবে। কাল স্কিল, ট্যাকটিক বা টেকনিকের লড়াই হবে না। কাল মূল লড়াই হবে মানসিকতার। ওই লড়াইটা যে জিততে পারবে ওরাই ম্যাচ জিতবে।’

শ্রীলঙ্কার সঙ্গে মোট ১২ টি-টোয়েন্টিতে মাত্র চারটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। আজ জিতে যাবে এমন উচ্চাশা দেখা যায় না সাহস নিয়ে। তবুও এ লড়াইয়ে বাংলাদেশের পরিকল্পনা কী হবে? সুজন জানালেন নতুন কিছুই না। দেশ থেকে যেই চিন্তা নিয়ে গেছেন তাই করতে হবে। কিন্তু সুজনের আক্ষেপ সেখানেই। দলের সবাইকে সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হলেও ক্রিকেটাররা মাঠে গিয়ে কিছু করতে পারছেন না। বল নষ্ট করছেন, শট নিতে ভয় পাচ্ছেন অথচ দেশে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ এবং অনুশীলনে ছক্কার প্রস্তুতিটাই নিয়েছেন সব ব্যাটার। সুজন তাই বিরক্ত হয়েই বললেন, ‘সবাই (বাকি কোচরা) ভিন্ন ভাষা বললেও আমি তো বাংলা বলি। আমার কথা তো ওদের বোঝার কথা। ওরাও বাংলায় শুনে বড় হয়েছে। আমরা যে মিরপুরে অনুশীলন ম্যাচ দুটো খেলেছি সেখানেও কী করব তা ঠিকঠাক বলে দিয়েছি। এখন কেউ যদি মেসেজ পাইনি বলে তাহলে সে মিথ্যে বলছে।’

দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে বাংলাদেশ দল হিসেবে ভালো করে। এমন উদাহরণ মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা অধিনায়ক থাকতে অনেকবারই দেখিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু মাশরাফীর নেতৃত্ব ছাড়ার পর এমন ফিরে আসা বা একটি জয় তুলে নেওয়ার উদাহরণ খুব একটা নেই বাংলাদেশের। ব্যাপারটা এখন মনে ভয় ধরে যাওয়া কি না এমন প্রশ্নে সুজন জানালেন, ‘ভয় না আমরা চাপ নিতে পারছি না। এটাই হতে পারে। এটা ক্রিকেটারদের চিন্তা করতে হবে কীভাবে ফিরে আসতে পারি। এটাই সত্য যে এমন ব্যাটিং করলে কোনো দলের সঙ্গেই জেতা যাবে না।’

বাঁচামরার লড়াইয়ে বাংলাদেশ পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে একাদশে। কাল সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন সুজন। অনুশীলনে ব্যাট হাতে বড় শটের প্রস্তুতি নিয়েছেন পারভেজ হোসেন ইমন। বিজয় অটোমেটিক চয়েজ ওপেনার হিসেবে এই ম্যাচেও খেলবেন। মুশফিকও অটোমেটিক চয়েজ হওয়ায় সাব্বির রহমানকে হয়তো বেঞ্চে বসতে হবে আরও এক ম্যাচ। ওপেনিংয়ে নাঈম শেখের জায়গায় ওই বদল বাদে দলে পরিবর্তন আসা কঠিন। তবে গত ম্যাচে বাজে করায় মোস্তাফিজুর ও সাইফউদ্দিনকে নিয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্তে যেতে রাজি নন সুজন। যদিও স্বীকার করলেন মোস্তাফিজ গত দুই বছরে দেশের বাইরে ভালো করতে পারেননি, ‘মোস্তাফিজকে অটো চয়েজ ভাবা এখন হয়তো থামাতে হবে। হয়তো-বা। এটা আমরাও চিন্তা করছি। গত ১৫-১৬ ম্যাচে যে ভালো করছে না। তবে এই ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছে মোস্তাফিজই। সেই অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু সে যে দুই বছরে ভালো করছে না এটা ঠিক কিন্তু মোস্তাফিজ ফিরে আসবে এটা আশা রাখি।’

গত বিশ্বকাপে বারবার পিচ পড়তে ভুল করেছিল বাংলাদেশ। এবারও সেই পথে হাঁটতে হলো। ম্যাচের আগেরদিন শারজাহতে ঝটিকা সফর দিয়েও পিচ পড়তে ভুল করেন সুজন-শ্রীরামরা। দলে একজন বাড়তি স্পিনারের বদলে নেওয়া হয় পেসার। আজ ম্যাচ দুবাইতে। এই পিচে আবার পেসারদের সুবিধা বেশি। তাই এখানে পেসার একজন কমালে আবারও ভুল করবে বাংলাদেশ।

শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের এমন ভুলের অপেক্ষায়। আগেই সাকিবদের ছোট করে দেওয়া দাশুন শানাকারা বাংলাদেশের মতোই চাপে আছেন। তার ওপর বিপক্ষকে খাটো করে দেখায় নিজেদের প্রমাণের চাপটাও আছে। প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতা কাটিয়ে লঙ্কানরাই চাইবে জোর ধাক্কায় ফিরে আসতে। ফেরার চাপে তারা পিষ্ট হোক আর সুযোগটা নিক বাংলাদেশ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *