ইমাম মেহেদী : রবীন্দ্র যুগে জন্মগ্রহণ করেও কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬) ছিলেন জীবন ও সাহিত্যে রবীন্দ্র অনুকরণমুক্ত। কবি নজরুলের বয়স যখন ২১, তখন তার প্রথম গল্প ‘বাউ-ুলের আত্মকাহিনী’ প্রকাশিত হয় ‘সওগাত’ পত্রিকার জ্যৈষ্ঠ ১৩২৬ সংখ্যায় (মে ১৯২৬)। এর আগে নজরুলের সময় ছিল খামখেয়ালিময়। পিতৃবিয়োগ, সংসারের অভাব-অনটন আর কৈশরের ছেলেমানুষি এবং একমুঠো ভাতের জন্য যুদ্ধে কেটেছে কৈশর।
নজরুলের জন্মের প্রায় ২০ বছর আগেই রবীন্দ্রনাথ কবি হিসেবে পরিচিত হয়ে গেছেন সাহিত্যিক সমাজে। সাহিত্যের সব শাখায় তার ক্ষুরধার লেখনির সংস্পর্শ দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি কাব্য প্রকাশিত হয় ১৯১০ সালে। নজরুল তখন ১১ বছরের বালক। নজরুলের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সরাসরি সাক্ষাৎ মেলে ১৯২১ সালের অক্টোবরে শান্তিনিকেতনে। এ সময় নজরুলের বয়স ২২। ভাষাবিদ ড. মুহম্মাদ শহীদুল্লাহ তাকে শান্তিনিকেতনে নিয়ে গিয়েছিলেন।
বোলপুর স্টেশন থেকে কবি নজরুল ও ড. শহীদুল্লাহকে অভ্যর্থনা জানান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একান্ত সচিব কবি সুধাকান্ত রায় চৌধুরী। নজরুল সেদিন রবীন্দ্রনাথের কাছে আবৃত্তি শুনতে চেয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ নজরুলকে উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘সে কি! আমি তোমার গান ও আবৃত্তি! শোনার জন্য প্রতিক্ষা করে আছি, তাড়াতাড়ি শুরু করে দাও।’ নজরুল সেদিন তার দরদি কণ্ঠে আবৃত্তি করেছিলেন ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থের ‘আগমনী’ কবিতাটি। এ ছাড়া সেদিন নজরুল তার সুরেলা কণ্ঠে কয়েকটি রবীন্দ্র সংগীত গেয়ে শুনিয়েছিলেন কবিগুরুকে। নজরুলের অনুরোধে রবীন্দ্রনাথও সেদিন আবৃত্তি করেছিলেন, ‘মাধবী হঠাৎ কোথা হতে/এলো ফাগুন দিনের স্রোতে,/এসে হেসেই বলে, যাই যাই।’
‘গুরুদেব আমি এসেছি।’ উচ্চস্বরে আবৃত্তি করতে লাগলেন ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি। নজরুল রবীন্দ্রনাথকে বললেন, ‘গুরুদেব আমি আপনাকে খুন করব। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ সেদিন তার এই বিখ্যাত বিদ্রোহী কবিতাটি শুনে প্রশংসা করে বুকে জড়িয়ে ধরে নজরুলকে বলেছিলেন, ‘সত্যিই তুই আমাকে খুন করেছিস
পরবর্তীকালে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে কবি নজরুলের বেশ কয়েকবার দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছিল। ১৯২১ সালের ডিসেম্বরে কবি নজরুল তার বিখ্যাত ‘বিদ্রোহী’ কবিতা রচনা করে সরাসরি পৌঁছে যান রবীন্দ্রনাথের জোড়াসাঁকের ঠাকুরবাড়িতে। ‘দে গরুর গা ধুইয়ে’ গাইতে গাইতে কবিগুরুকে ডাকলেন, ‘গুরুদেব আমি এসেছি।’ উচ্চস্বরে আবৃত্তি করতে লাগলেন ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি। নজরুল রবীন্দ্রনাথকে বললেন, ‘গুরুদেব আমি আপনাকে খুন করব। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ সেদিন তার এই বিখ্যাত বিদ্রোহী কবিতাটি শুনে প্রশংসা করে বুকে জড়িয়ে ধরে নজরুলকে বলেছিলেন, ‘সত্যিই তুই আমাকে খুন করেছিস।’
১৯২০ সালের জুলাই ১২ তারিখে ‘নবযুগ’ নামক একটি সান্ধ্য দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হতে শুরু করে। অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে প্রকাশিত এই পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক। এই পত্রিকার মাধ্যমেই কবি নজরুল নিয়মিত সাংবাদিকতা শুরু করেন। ওই বছরই ওই পত্রিকায় ‘মুহাজিরীন হত্যার জন্য দায়ী কে?’ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লেখেন তিনি। এ জন্য পত্রিকার জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং নজরুলের ওপর পুলিশের নজরদারি শুরু হয়। সাংবাদিকতার মাধ্যমে তিনি তৎকালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পান। একইসঙ্গে মুজাফ্ফর আহমদের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা-সমিতিতে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতি বিষয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পেয়েছিলেন। বিভিন্ন ছোটখাটো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কবিতা ও সংগীতচর্চাও চলছিল একাধারে। ব্রাহ্মসমাজের সংগীতজ্ঞ মোহিনী সেনগুপ্তা তার কয়েকটি কবিতায় সুর দিয়ে স্বরলিপিসহ পত্রিকায় প্রকাশ করেছিলেন। ‘সওগাত’ পত্রিকার ১৩২৭ বঙ্গাব্দের বৈশাখ সংখ্যায় তার প্রথম গান প্রকাশিত হয় ‘বাজাও প্রভু বাজাও ঘন’।
১৯২২ সালের ২৫ জুন কলকাতার রামমোহন লাইব্রেরিতে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের সভাপতিত্বে সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত স্মরণে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। রবীন্দ্রনাথ ওই স্মরণসভায় নজরুলকে ডেকে পাশে বসিয়েছিলেন। নজরুল আবৃত্তি করেছিলেন ‘সত্যকবি’ কবিতাটি। রবীন্দ্রনাথ কর্তৃক নজরুলকে এভাবে স্নেহবন্ধনে আবদ্ধ করায় তখন অনেক কবি-সাহিত্যিক ঈর্ষান্বিত হয়েছিলেন।
কবি নজরুলের ‘ধূমকেতু’ পত্রিকা প্রকাশিত হয় ১৯২২ সালের ১১ আগস্ট। রবীন্দ্রনাথ এই পত্রিকার আশীর্বাণী লিখে দেন।
কাজী নজরুল ইসলাম কল্যাণীয়েষু
‘আয় চলে আয় রে ধূমকেতু
আধারে বাঁধ অগ্নিসেতু
দুর্দিনের এই দুর্গশিরে
উড়িয়ে দে তোর বিজয় কেতন।
অলক্ষণের তিলকরেখা
রাতের ভালে হোক না লেখা,
জাগিয়ে দেরে চমক মেরে
আছে যারা অর্ধচেতন!’
ধূমকেতুর ১২শ সংখ্যায় (২৬ সেপ্টেম্বর ১৯২২) প্রকাশিত নজরুলের ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ নামক একটি প্রতীকধর্মী কবিতা প্রকাশের পর নজরুলকে গ্রেফতার করে এবং তার বিরুদ্ধে রাজদ্রোহ মামলা করা হয়। ১৯২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি ম্যাজিস্ট্রেট সুইনহো মামলার রায় প্রদান করে। এতে নজরুলকে এক বছরের সশ্রম কারাদ-াদেশ প্রদান করে। ওই বছরই ২২ ফেব্রুয়ারি কারাগারে থাকাবস্থায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ‘বসন্ত গীতিনাট্য’ নজরুলকে উৎসর্গ করেন। রবীন্দ্রনাথ পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়কে জোড়াসাঁকোর বাড়িতে ডেকে বলেন, ‘জাতির জীবনের বসন্ত এনেছে নজরুল। তাই আমার সদ্য প্রকাশিত ‘বসন্ত’ গীতিনাট্যখানি ওকেই উৎসর্গ করেছি। সেখানা নিজের হাতে তাকে দিতে পারলে আমি খুশি হতাম। কিন্তু আমি যখন নিজে গিয়ে দিয়ে আসতে পারছি না, ভেবে দেখলাম, তোমার হাত দিয়ে পাঠানোই সবচেয়ে ভালো। আমার হয়ে তুমিই বইখানা ওকে দিও।’ (গুরু-শিষ্য সম্পর্ক : রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল। হাবিবুর রহমান স্বপন, ২৩ মে, ২০১৪ দৈনিক ইত্তেফাক)
এই বইটি নজরুলকে উৎসর্গ করায় রবীন্দ্রনাথের অনুরাগী বেশ কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক খুশি হতে পারেননি। তাই রবীন্দ্রনাথ তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘নজরুলকে আমি ‘বসন্ত’ গীতিনাট্য উৎসর্গ করেছি এবং উৎসর্গ পত্রে তাকে ‘কবি’ বলে অবহিত করেছি। জানি তোমাদের মধ্যে কেউ এটা অনুমোদন করতে পারনি। আমার বিশ্বাস, তোমরা নজরুলের কবিতা না পড়েই এই মনোভাব পোষণ করেছ। আর পড়ে থাকলেও তার মধ্যে রূপ ও রসের সন্ধান করনি, অবজ্ঞাভরে চোখ বুলিয়েছ মাত্র।’
জানি তোমাদের মধ্যে কেউ এটা অনুমোদন করতে পারনি। আমার বিশ্বাস, তোমরা নজরুলের কবিতা না পড়েই এই মনোভাব পোষণ করেছ। আর পড়ে থাকলেও তার মধ্যে রূপ ও রসের সন্ধান করনি, অবজ্ঞাভরে চোখ বুলিয়েছ মাত্র
রবীন্দ্রনাথ মন্তব্য করেন, ‘নজরুলের কাব্যে অসির ঝনঝনানি আছে। আমি যদি তরুণ হতাম, তাহলে আমার কলমেও ওই একই ঝঙ্কার বাজত।’ রবীন্দ্রনাথ পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে বইটি দিয়ে রবীন্দ্রনাথ আরো বলেছিলেন, ‘নজরুলকে বলো, আমি নিজের হাতে তাকে দিতে পারলাম না বলে সে যেন দুঃখ না করে। আমি তাকে সমগ্র অন্তর দিয়ে অকুণ্ঠ আশীর্বাদ জানাচ্ছি। আর বলো, কবিতা লেখা যেন কোনো কারণেই সে বন্ধ না করে। সৈনিক অনেক মিলবে, কিন্তু যুদ্ধে প্রেরণা জোগাবার কবিও তো চাই।’
নজরুল বইটি পেয়েই বুকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। এ প্রসঙ্গে নজরুল লিখেছেন, ‘এ সময়ে রবীন্দ্রনাথ তার ‘বসন্ত’ নাটক আমায় উৎসর্গ করেন। তার এই আশীর্বাদমালা পেয়ে আমি জেলের সর্বজ্বালা, যন্ত্রণা ক্লেশ ভুলে যাই।’ নজরুল ইসলাম তার ‘সঞ্চিতা’ কাব্যগ্রন্থটি রবীন্দ্রনাথকে উৎসর্গ করেন।
১৯২৩ সালের ১৪ এপ্রিল হুগলি জেলখানায় নজরুল অনশন করেন। নজরুল ইসলামকে প্রেসিডেন্সি জেলের ঠিকানায় রবীন্দ্রনাথ অনশন ভঙ্গ করার জন্য টেলিগ্রাম পাঠান। তাতে লেখেন, Give up hunger strike, our literature claims you. জেল কর্তৃপক্ষ টেলিগ্রামটি ফেরত পাঠায়। কারণ, নজরুল তখন ছিলেন হুগলি জেলখানায়।
নজরুল ১৯৩৫ সালে ‘নাগরিক’ পত্রিকার পূজো সংখ্যার জন্য রবীন্দ্রনাথের কাছে লেখা চেয়ে চিঠি পাঠান। তখন রবীন্দ্রনাথের বয়স ৭৫। বেশ অসুস্থ। ১৯৩৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর চিঠির উত্তরে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন,
‘অনেক দিন পর তোমার সারা পেয়ে মন খুব খুশি হলো। …তুমি তরুণ কবি, এই প্রাচীন কবি তোমার কাছে আর কিছু না হোক করুণা দাবি করতে পারে। শুনেছি বর্ধমান অঞ্চলে তোমার জন্ম। আমরা থাকি পাশের জিলায় (বীরভূমের বোলপুরে)। কখনো যদি ওই সীমানা পেরিয়ে আমাদের এদিকে আসতে পারো, খুশি হব।’ (বাংলা সাহিত্যে নজরুল। আজাহারউদ্দীন খান, পৃষ্ঠা ১৫৮)
চিঠির জবাবে নজরুল ‘নাগরিক’ পত্রিকায় ‘তীর্থপথিক’ নামক নিচের কবিতাটি লিখে রবীন্দ্রনাথকে পাঠিয়েছিলেন,
‘হে কবি, হে ঋষি অন্তর্যামী আমারে করিও ক্ষমা
পর্বতসম শত দোষত্রুটি ও চরণে হল জমা।…
তুমি স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ বিস্ময়Ñ
তব গুণে-গানে ভাষা-সুর যেন সব হয়ে যায় লয়।…
প্রার্থনা মোর, যদি আরবার জন্মি এ ধরণীতে,
আসি যেন শুধু গাহন করিতে তোমার কাব্য-গীতে।.
(গুরু-শিষ্য সম্পর্ক : রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল। হাবিবুর রহমান স্বপন, ২৩ মে, ২০১৪ ইত্তেফাক)
যখন রবীন্দ্রনাথের আশি বছর পূর্তি হয় ১৯৪১ সালে, তখন কাজী নজরুল ইসলাম তার জন্মদিন উপলক্ষে লিখেছেন ‘অশ্রুপুষ্পাঞ্জলি’। ১৯২০ থেকে ১৯৪১ সালে রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণের পূর্বকাল পর্যন্ত রবীন্দ্র-নজরুল সম্পর্ক ছিল পারস্পরিক স্নেহ ও শ্রদ্ধার গুরু-শিষ্যের বন্ধনে।
রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুতে নজরুল যে গভীরভাবে শোকাভিভূত হয়েছিলেন, তার পরিচয় রবীন্দ্রনাথের পরলোকগমনে তাৎক্ষণিকভাবে রচিত নজরুলের বিভিন্ন কবিতা ও গানে পাওয়া যায়। ওই দিন (২২ শ্রাবণ, ১৩৪৮) কাজী নজরুল ইসলাম আকাশবাণী বেতারকেন্দ্র থেকে ধারা বর্ণনা প্রচার করেন এবং ব্যথিত হয়ে ‘রবিহারা’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন।
কবি নজরুল রবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশায় তার ওপর চারটি কবিতা লিখেছিলেন। ‘অশ্রু পুষ্পাঞ্জলি, কিশোর রবি, রবির জন্মতিথি ও তীর্থপথিক’। এ ছাড়াও ঘুমাইতে দাও শ্রান্ত রবিরে, ‘রবিহারা’ সালাম অন্ত রবি, মুত্যুহীন রবীন্দ্রসহ বেশ কিছু কবিতা ও গান রচনা করেন। রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর এক বছর পরেই নজরুল চিরতরে অসুস্থ এবং ক্রমান্বয়ে সম্বিতহারা ও নির্বাক হয়ে যান। বাংলার দুই মহান কবির কণ্ঠ প্রায় একই সময়ে নীরব হয়ে যায়। (বাংলা সাহিত্যে নজরুল। আজাহারউদ্দীন খান, পৃষ্ঠা ১৫৮)
আমাদের দেশে এখনো কিছু কুকথা প্রচলন আছে, রবীন্দ্রনাথের কারণে নজরুলের যথার্থ মূল্যায়ন হয়নি। এমনকি নজরুলের লেখা চুরি করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পেয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ কখনোই নজরুলকে ভালো চোখে দেখেননি। তিনি সবসময় নজরুলকে দমিয়ে রেখেছিলেন। আমাদের দেশ থেকে কবে যাবে এই মিথ্যা, কুৎসা ও রবীন্দ্র-নজরুল বিদ্বেষ সাম্প্রদায়িকতা। স্বৈরাচারী সরকারের মতো কবে নিপাত যাবে আমাদের এই মনগড়া হিংসা-বিদ্বেষ। আজ আমাদের দুই মহান গুরু-শিষ্যের বন্ধনের কবি রবীন্দ্রনাথ কিংবা নজরুল যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে অবশ্যই বলতেন, যুগের পর যুগ তোমরা যা বলছো এবং যা ভাবছোÑ তা সত্য নয়, হতে পারে না। তা হবে না, হওয়ার নয়। রবীন্দ্রনাথ হয়তো বলতেন, আমরা দুজনে একে-অন্যের সম্পূরক। একই সূতোয় গাঁথা দুটি প্রাণ। নজরুল নিশ্চয় রবীন্দ্রনাথকে আবার বলতেন, গুরুদেব আমি এসেছি। লোকেরা যা বলছে তা সত্য নয়, সত্য নয়। তাইতো আজ খুব বলতে ইচ্ছে করে, আমাদের এই ভ্রান্ত ধারণার বিরুদ্ধে কবি থাকলে আজ প্রতিবাদ করতেন।
লেখক : কবি ও প্রাবন্ধিক
emam.mehedi@gmail.com