করোনাযোদ্ধাদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে সম্মানিত করুন
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : যারা জীবন বাজি রেখে করোনা সংক্রমণকে উপেক্ষা করে পরের জন্য কাজ করে গেছে তাদেরকে ভুলে গেলে চলবে না। তাদের যথাযথ মূল্যায়ন হওয়া জরুরি। এদের দেখেই নতুন প্রজন্ম উৎসাহিত হবে বলে আমরা মনে করি। দায়িত্ব পালনের সময় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরিপত্র জারি করা হয়েছিল গত ২৪ এপ্রিল। ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর উল্লেখ করে পরিপত্রে ২০১৫-এর বেতনকাঠামো অনুযায়ী গ্রেড ভেদে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কত ক্ষতিপূরণ পাবেন তা উল্লেখ ছিল।
বলা হয়েছিল, শুধু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরাসরি কর্মরত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যসেবাকর্মী এবং ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে লকডাউন ও সরকার ঘোষিত নির্দেশনা বাস্তবায়নে নিয়োজিত মাঠ প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্য কর্মচারীরা এই সুবিধা পাবেন। এর বাইরের কেউ পাবেন না। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, প্রতিশ্রুত সেই ক্ষতিপূরণের টাকা আক্রান্ত একজনের হাতেও ওঠেনি।
যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভালো হয়ে গেছেন বা যাচ্ছেন, তাঁরা আর ক্ষতিপূরণ পাবেন কি না তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। তবে যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তাঁদের কিছু পরিবার ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছে। যেসব পরিবার ক্ষতিপূরণ পেয়েছে, তাঁদের মধ্যে প্রথম সারির করোনাযোদ্ধা চিকিৎসক মাত্র একজন। মারা যাওয়া সরকারি কর্মচারীদের পরিবারের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা বিতরণও চলছে কচ্ছপগতিতে। করোনায় সরকারি কর্মচারীদের ক্ষতিপূরণ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, প্রথম দিকে যে ভীতিকর পরিস্থিতি ছিল, সে সময় ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ছিল। পরবর্তী সময়ে রিজেন্ট কেলেঙ্কারির হোতা সাহেদচক্রের মাধ্যমে ভুয়া করোনা সনদ বানানোর খবর চাউর হওয়ার পর বিষয়টিতে পেছনে হাঁটে অর্থ মন্ত্রণালয়। বর্তমানে করোনা সংক্রমণের ব্যবস্থাপনায় ভীতিকর পরিস্থিতি অনেকটাই কেটে গেছে। তাই প্রথম দিককার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আক্রান্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি আপাতত বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না। এখন সময় এসেছে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের।
বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। কারণ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এ অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। কেউ ভুয়া সনদ দিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতেই পারে। কিন্তু কয়েকজনের কারণে তো সত্যিকারের করোনাযোদ্ধাদের বঞ্চিত করা যাবে না। আর ভীতি কেটে যাওয়ার বিষয়টিই যদি ক্ষতিপূরণ না দেওয়ার কারণ হয়, তাহলে সে বিষয়টিও স্পষ্ট করা দরকার। আমরা আশাবাদি হতে চাই, করোনাযোদ্ধাদের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সরকার তার অবস্থান স্পষ্ট করবে।