কর্ণফুলী টানেলের মূল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

কর্ণফুলী টানেলের মূল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

পাথেয় রিপোর্ট : চট্রগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ বোরিং কাজের ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের মূল কাজের উদ্বোধন করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সোয়া ১১টার দিকে চট্টগ্রামে নির্মিতব্য উপমহাদেশের প্রথম নদীর নিচ দিয়ে সড়ক টানেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের মূল কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে চট্টগ্রাম শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো। শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে টানেল এলাকা পর্যন্ত ভিআইপি সড়কে টহল দিচ্ছে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা। প্রকল্প এলাকায় মেটাল ডিটেক্টর ও ডগ স্কোয়াড দিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ, র‌্যাব, নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

রোববার সকাল ১১টার দিকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে করে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম পৌঁছান। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তিনি সড়ক পথে নিকটস্থ টানেল এলাকায় যান।

টানেলের বোরিং কাজ উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পাইলিং কাজের উদ্বোধন করেন। সেখান থেকে তিনি রেস্ট হাউজে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে পতেঙ্গা সাগর পাড়ে আয়োজিত ব্যতিক্রমী এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন।

কর্ণফুলী টানেলের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশিদ চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, খননকাজের জন্য মেশিন পুরোপুরি প্রস্তুত। সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এই চার লেনের টানেল খনন করতে সময় লাগবে দুই বছর। এখন যে কাজের গতি, এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০২২ সালে এই টানেল দিয়ে গাড়ি চলবে।

জানা গেছে, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের জিটুজি মাধ্যমে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে; প্রকল্পে চীনের প্রকৌশলীসহ ৫৫০ জন এবং দেশের এক হাজার ২০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কাজ করছেন। ২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং বাংলাদেশে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রকল্প উদ্বোধন করেন। এরপর অর্থছাড় নিয়ে নানা জটিলতা কাটিয়ে ২০১৮ সালে প্রকল্প নির্মাণে গতি পায়।

টানেল নির্মাণের ফলে চট্টগ্রাম মূল শহরের সঙ্গে কর্ণফুলীর অপর প্রান্ত আনোয়ারার নিরবচ্ছিন্ন এবং সহজ যোগাযোগ হবে। আর এতে আনোয়ারা-বাঁশখালী উপকূলীয় এলাকায় শিল্পের প্রসার ঘটবে। টানেল ঘিরে সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে, মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সাগরপার দিয়ে বিকল্প মহাসড়ক নির্মাণ এবং পরে যা মিয়ানমার হয়ে চীনের কুনমিং পর্যন্ত এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কথা। এর ফলে চট্টগ্রাম হয়ে উঠবে নতুন অর্থনৈতিক করিডর।

টানেল ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী আজ উদ্বোধন করলেন ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। তিন হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর লালখান বাজার থেকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। মাঝখানে ৯টি পয়েন্টে ওঠানামার সুযোগ রাখা হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *