কর্নাটকে হিজাব নিষিদ্ধ করায় মুসলিম নারীরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত : প্রতিবেদন

কর্নাটকে হিজাব নিষিদ্ধ করায় মুসলিম নারীরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত : প্রতিবেদন

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ভারতের কর্নাটকে হিজাব নিষিদ্ধ করার ঘটনায় নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে খারাপ প্রভাব পড়েছে। এই সিদ্ধান্তের পর রাজ্যটির হাজার হাজার মুসলিম মেয়ে শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত হয়েছেন।

মানবাধিকার সংস্থা “পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ”র এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনটি দেশটির হাইকোর্টের রায়ের পরে ছাত্রদের থেকে সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতে করা। যেখানে বলা হয়েছে, এটি মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রের স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপের কারণে বৈষম্যহীন শিক্ষার অধিকার, সমতার অধিকার, মর্যাদার অধিকার, গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার, মত প্রকাশের অধিকার বিনষ্ট করা হয়েছে।

সংস্থাটির অভিযোগ, কর্নাটক সরকার তার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করেছে। সংগঠনটি রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ বোমাইকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। রাজ্য সরকারের এই হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে দেশটির বিচার বিভাগকেও অনুরোধ জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মানবাধিকার কমিশন এবং সংখ্যালঘু কমিশনের উচিত শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের দায়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে অভিযোগ দায়ের করা এবং দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।

“পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ”র সমীক্ষায় বলা হয়েছে, আদালতের মামলার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে ভয় তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া “হিন্দু ছাত্ররা” হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে হুমকিমূলক বার্তা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ছাত্রী বলেছেন, “আমাদের শাস্তি দিতে চেয়েছিল তারা। হত্যা করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। কিছু ছেলে আমাদের জনসমক্ষে হিজার ও বোরখা পরার কারণে হয়রানি করেছে।”

সমীক্ষায় উঠে এসেছে, বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার পরিবর্তে হয়রানিকে প্রশ্রয় দিয়েছে। এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানও অনেক সময় কটূক্তিমূলক কথাবার্তা বলতেন। পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া এবং হিজাব পরার কারণে এই ধরনের কটূক্তির শিকার হতে হচ্ছে মুসলিম নারী শিক্ষার্থীদের।

গত বছরের শেষ দিকে এবং চলতি বছরের শুরুর দিকে রাজ্যটির উদুপি শহরে মুসলিম ছাত্রীকে হিজাব পরার কারণে ক্লাসে যোগ দিতে বাধা দেওয়া হয়। পরে এটি বিতর্কের জন্ম দেয়। পরে কর্নাটকের বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়।

চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি কর্নাটক সরকার “সমতা, অখণ্ডতা এবং জনশৃঙ্খলাকে বিঘ্নিত করে” এমন পোশাক নিষিদ্ধ করার আদেশ দেয়। ১৫ মার্চ কর্নাটক হাইকোর্ট স্কুল এবং কলেজগুলোতে হিজাবের ওপর রাজ্য সরকারের নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছিল এবং বলেছিলেন, ইসলামে হিজাব পরা অপরিহার্য নয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *