কাঙ্ক্ষিত রেমিট্যান্স পেতে প্রবাসীদের কর্মক্ষেত্রে পাঠান
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বিশ্ব মহামারির চাকার নিচে পিষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। প্রতিটি মুহূর্তেই কমছে দেশের রেমিট্যান্স আয়। কাক্সিক্ষত এই আয় পেতে এবং বৃদ্ধি করতে প্রবাসীদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপদে ফিরে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। বিশেষত সৌদি আরবের সঙ্গে দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি করাও সময়ের দাবি। যেহেতু ভারতের নাগরিকদের জন্য সৌদি প্রথ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, সে দিক থেকে বাংলাদেশের সামনে রয়েছে দারুণ সুযোগ। নতুনভাবে সৌদি সরকার আকামার মেয়াদ বৃদ্ধি করায় বাহ্যত সরকারের সাফল্য থাকলেও নিরাপদে প্রবাসীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে পাঠানো একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের অসংখ্য পরিবারের আয়ের উৎস এই প্রবাসী কর্মীরা যোগান দিয়ে থাকেন।
করোনাভাইরাসজনিত কারণে সৌদি প্রবাসীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে এমন কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার। নির্ধারিত সময়ে ফিরতে না পারলে চাকরি হারাতে হবে। নতুন করে ভিসা ও আকামা করতে হবে। তাতে খরচ হয়ে যাবে অনেক টাকা। তার পরও সবাই ভিসা পাবেন এমন নিশ্চয়তা নেই। এ অবস্থায় উড়োজাহাজের টিকিট না পেয়ে সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছা নিয়ে মহাসংকটে পড়েছেন সৌদিপ্রবাসীরা। আবার অনেকের রিটার্ন টিকিট আছে, তবু তাঁদের টিকিট রি-ইস্যুর জন্য টাকা নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। সৌদি আরবে কাজে ফিরতে প্রবাসীদের জন্য ঢাকা থেকে শুধু সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনসের দুটি ফ্লাইট চলছে। রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দিচ্ছে না সৌদি আরব। আগামী ১ অক্টোবরের আগে বিমানের ফ্লাইট চালুর সম্ভাবনা নেই বলে জানা গেছে। উড়োজাহাজের টিকিট পেতে কয়েক দিন ধরে রাজধানীর সড়কে বিক্ষোভ করছেন কর্মীরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ছুটিতে এসে দেশে আটকে পড়া কর্মীদের ভিসার মেয়াদ বাড়াতে সৌদি আরবকে অনুরোধ জানিয়ে যে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ, তাতে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে।
করোনার কারণে বন্ধ হওয়া বিমান চলাচল এখনো পুরোপুরি শুরু হয়নি। সৌদি এয়ারলাইনস দুটি ফ্লাইট পরিচালনা করলেও স্বাস্থ্যবিধির বাধ্যবাধকতায় ছয় শতাধিক আসনের এসব ফ্লাইটে সর্বোচ্চ ২৬০ জন যাত্রী পরিবহনের সুযোগ রয়েছে। সৌদি এয়ারলাইনসের চলমান দুটি ফ্লাইটে প্রতিদিন ৫২০ জন যাত্রী সৌদি আরবে ফিরলেও ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আটকে পড়াদের ৫ শতাংশও ফিরতে পারবে না। সৌদি এয়ারলাইনস আবেদন করলে ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানোর অনুমতি দেওয়া হবে। তারা এখনো আবেদনই করেনি বলে জানা গেছে। বিমান আটটি ফ্লাইট পরিচালনার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তবে বিমানকে সৌদি কর্তৃপক্ষ এখনো অবতরণের অনুমতি দেয়নি।
আমরা জানি, আমাদের অর্থনীতিতে করোনাভাইরাসের ধাক্কা লাগতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাস আয়ের (রেমিট্যান্স) একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। আশার আলো নেই নতুন শ্রমবাজারে। এ অবস্থায় সৌদিপ্রবাসী কর্মীরা সেখানে কাজ ফিরে না পেলে বাংলাদেশকে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে নিঃসন্দেহে। প্রবাসীদের কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাওয়ার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। সংশ্লিষ্ট অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা ছাড়া আর কোনো পথ নেই। আমরা আশাবাদি হতে চাই, শিগগিরই জোর কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে সব সংকট দূর করা হবে।