পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ‘কুরবানীর মূল উদ্দেশ্য হলো ইখলাস। আল্লাহর কাছে বেশী টাকার কোন মুল্য নাই। বিশুদ্ধ নিয়্যতটাই আল্লাহ তাআলার কাছে মূল। সুতরাং পশু কুরবানী দেওয়ার আগে আমরা আমাদের নিয়্যতটা ঠিক করি।’
শুক্রবার (১৬ জুলাই) ইকরা ঝিল মসজিদ কমপ্লেক্সে জুমার বয়ানে এসব কথা বলেন শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।
সহীহ নিয়্যতে কুরবানী করার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের সমাজে লোকদেখানো কুরবানী করে দুই শ্রেনীর লোক। এক শ্রেনীর লোক আছে এমন, যাদের অনেক টাকা, তারা বেশী টাকা দিয়ে কুরবানী করে প্রতিযোগীতা করে। আরেক শ্রেনী আছে, যাদের উপর কুরবানীই ওয়াজিব না। তারা ধারকর্জ করে হলেও কুরবানী করে। যাতে মানুষ কিছু বলতে না পারে। এই দুই শ্রেনীর কারো কুরবানীই আল্লাহ তাআলা কবুল করবেন না। কারণ তাদের নিয়্যত শুদ্ধ না। সুতরাং কুরবানী করার আগে আমরা আমাদের নিয়্যতটাকে শুদ্ধ করি।
সহীহ নিয়্যতে কুরবানী করার ফজিলত সম্পর্কে বলতে গিয়ে এই আধ্যাত্নিক রাহবার বলেন, সহীহ নিয়্যতে কুরবানী করলে কুরবানীর পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই আল্লাহ তাআলা কুরবানীর পশুর প্রতিটি পশমের বিনিময়ে সওয়াব দান করেন।
আরও পড়ুন: দেওবন্দের সূর্য সন্তান ‘মাওলানা কাজি মুতাসিম বিল্লাহ’
নিয়্যত ঠিক করার জন্যও মশকের প্রয়োজন আছে উল্লেখ করে ফিদায়ে মিল্লাত সাইয়্যিদ আসআদ মাদানীর এই খলীফা বলেন, কোন জিনিসই মানুষ মায়ের পেট থেকে শিখে আসে না। দুনিয়ার প্রতিটি জিনিস মশক করে শিখতে হয়। ঠিক তেমনিভাবে নিয়্যত ঠিক করার জন্যও মশক করতে হয়। আর নিয়্যত ঠিক করার মশক হলো মুরাকাবা। অর্থাৎ নিজের খোঁজ নেয়া, আমি কি আল্লাহর দিকে আছি নাকি গায়রুল্লার দিকে আছি।
প্রতিটি আমলের মাঝে নিয়্যতের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমন অনেক আমল আছে যেগুলো সব জায়গায় প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু একমাত্র নিয়্যত এমন একটা আমল, যেটা ছাড়া কোন আমলই গ্রহনযোগ্যতা পায় না। আর সবকিছুর বেলায় পার্সেন্টিজের হিসাব হয়, কিন্তু নিয়্যতের বেলায় কোনো পার্সেন্টিজ হয় না। যদি নিয়্যতের মাঝে সামান্য গন্ধ এসে যায়, তাহলে পুরো আমলটাই বরবাদ হয়ে যায়।
কুরবানীর পশুর মাংস ফ্রিজে জমিয়ে না রাখার আহ্বান জানিয়ে আল্লামা মাসঊদ বলেন, ইসলামের নিয়ম হলো, যখন দেশে দুর্ভিক্ষ থাকে, তখন তিন দিনের বেশী পরিমান গোস্তু জমা করা জায়েজ নাই। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় আরও বেশী দিন গোস্ত রাখা বৈধ রয়েছে।