কুরবানী সংশ্লিষ্ট মাসআলা | প্রথম পর্ব

কুরবানী সংশ্লিষ্ট মাসআলা | প্রথম পর্ব

পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলিম উম্মাহর সার্বজনীন দুটি উৎসবের অন্যতম একটি। এই ঈদে কুরবানী একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি আদায় করা ওয়াজিব। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি এই ইবাদত পালন করে না তার ব্যাপারে হাদীস শরীফে এসেছে- ‘যে ব্যক্তির সামর্থ্য আছে অথচ সে কুরবানী করেনি সেজন্য আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়।’ [সুনানে ইবনে মাজাহ – ৩১২৩; মুস্তাদরাকে হাকেম – ৩৫১৯; আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব ২/১৫৫]

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর পাঠকদের জন্য কুরবানী সংশ্লিষ্ট শরীয়তের নির্দেশনা মোতাবেক তিনটি মাসাআলা তুলে ধরেছেন ‘আল জামিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা’ হারিনালের শিক্ষক মুফতি আব্দুল মুহাইমিন

এক. কুরবানী কার উপর কখন ওয়াজিব

মাসআলা: নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী, ‘যে ব্যক্তির সামর্থ্য আছে অথচ সে কুরবানী করেনি সেজন্য আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়।’ [সুনানে ইবনে মাজাহ – ৩১২৩]

এখানে সামর্থ্য দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন মুকীম প্রত্যেক মুসলিম নারী-পুরুষ ১০ যিলহজ ফজর থেকে ১২ যিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে, তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নেসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে নিসাব হলো, এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার উপর কুরবানীর দিনগুলোর ভিতরেই কুরবানী করা ওয়াজিব। [আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫]

দুই. কুরবানীর দিনগুলোতে কুরবানী না করতে পারলে করণীয়

মাসআলা: কেউ যদি কুরবানীর দিনগুলোতে ওয়াজিব কুরবানী দিতে না পারে, তাহলে কুরবানীর পশু ক্রয় না করে থাকলে তার উপর কুরবানীর উপযুক্ত একটি ছাগলের মূল্য সদকা করা ওয়াজিব। আর যদি পশু ক্রয় করেছিল, কিন্তু কোনো কারণে কুরবানী দেওয়া হয়নি, তাহলে ঐ পশু জীবিত সদকা করে দিবে। [বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৪; ফাতাওয়া কাযীখান ৩/৩৪৫]

তিন. বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তির কুরবানী

মাসআলা: বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তির জন্য নিজ দেশে বা অন্য কোথাও কুরবানী করা জায়েয।কেননা কুরবানীদাতা এক স্থানে আর কুরবানীর পশু ভিন্ন স্থানে থাকলে কুরবানীদাতার ঈদের নামায পড়া বা না পড়া ধর্তব্য নয়; বরং পশু যে এলাকায় আছে ওই এলাকায় ঈদের জামাত হয়ে গেলে পশু জবাই করা যাবে। [আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৮]

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *