কুষ্টিয়া সুগারমিল চলছে লোকসানের ঘানি মাথায় নিয়েই

কুষ্টিয়া সুগারমিল চলছে লোকসানের ঘানি মাথায় নিয়েই

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার  বিভিন্ন সময়ে বছরের পর বছর লোকসান হওয়া কুষ্টিয়া সুগারমিলটি ২০০৫-০৬ মৌসুমে সর্বশেষ ৯৩ লাখ ৮ হাজার টাকা লাভ করেছিল। তারপর থেকেই আর লাভের মুখ দেখেনি প্রতিষ্ঠানটি। লোকসানের ঘানি মাথায় নিয়ে চলছে সুগারমিলটি। কুষ্টিয়ার জগতিতে ২২১.৪৬ একর জায়গা নিয়ে ১৯৬৫-৬৬ সালে পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরুর মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে কুষ্টিয়া সুগারমিল। ১০ হাজার মেট্রিকটন উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ে ১৯৬৬-৬৭ সালে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করে মিলটি। পরে তা বর্ধিত করে ১৫২৪০ মেট্রিকটন করা হয়।

কুষ্টিয়া সুগারমিলের দেওয়া তথ্যমতে, ১৯৬৫-৬৬ মৌসুমে ৬২৭৯১.৬৬ মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে ৩৭৬৩.৬৬ মেট্রিকটন চিনি উৎপাদন করা হয়। সে মৌসুমে মিলের লোকসান হয় ৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। এর পর বাণিজ্যিকভাবে ১৯৬৬-৬৭ সালে ১৪৩৯২৮.৬৩ মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে প্রতিষ্ঠানটি লাভ করে ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। আশার আলো নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও পরে ১৯৬৭-৬৮ মৌসুম থেকে শুরু করে টানা ১৯৭১-৭২ মৌসুমে লোকসান করে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ১৯৭২-৭৩ মৌসুমে কোনো উৎপাদন হয়নি কুষ্টিয়া সুগারমিলে। সে বছর লোকসান হয় ৩৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। মুক্তিযুদ্ধের পরেই আবার ঘুরে দাঁড়ায় মিলটি। ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে ৭৬ লাখ ৯৯ হাজার এবং ১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে লাভ করে ৪৮ লাখ ৫২ হাজার টাকা। সবর্শেষ একটানা ৫ বছর লাভ করে ১৯৮০-৮১ মৌসুম থেকে ১৯৮৪-৮৫ মৌসুম পর্যন্ত লাভ হয় ১৬ কোটি ৮২ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

১৯৯০-৯১ মৌসুম থেকে ৪ বছর লোকসান করে ১৩ কোটি ৫১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। পরবর্তীতে ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে ২ কোটি ৬ লাখ ২২ হাজার টাকা এবং ১৯৯৫-৯৬ সালে ১ কোটি ২৬ লাখ ১৭ হাজার টাকা লাভ করে। তারপর আবারো শুরু হয় লোকসানের পালা। ১৯৯৬-৯৭ মৌসুম থেকে শুরু করে টানা ২০০৪-০৫ মৌসুম পর্যন্ত লোকসান করে ৪৬ কোটি ৪৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। পরে আবারো ঘুরে দাঁড়ায় কুষ্টিয়া সুগারমিল। ২০০৫-০৬ মৌসুমে লাভ করে ৯৩ লাখ ৮ হাজার টাকা। এর পর থেকে আর লাভের মুখ দেখেনি এ প্রতিষ্ঠান। ২০০৬-০৭ মৌসুম থেকে বর্তমান পর্যন্ত প্রায় ৩৪৫ কোটি ৯৪ লাখ ৮২ হাজার লোকসান করে। সর্বশেষ ২০১৭-২০১৮ মৌসুমেই ৪২১৩৭.৬৩০ মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে ১ হাজার ৮৫৯ মেট্রিকটন চিনি উৎপাদন করে। এতে মিলের লোকসান হয় ৫৬ কোটি ২১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। কুষ্টিয়া সুগারমিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: আবদুল কাদের জানান, ভরা মৌসুমে চিনির কাঁচামাল আখের যোগান কম থাকায় উৎপাদন কম হচ্ছে। তাই প্রতিবছর লোকসান গুনতে হচ্ছে।

____________

patheo24,/105/sl

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *