২রা মার্চ, ২০২১ ইং , ১৭ই ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ , ১৭ই রজব, ১৪৪২ হিজরী
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : কুড়িগ্রামে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। জেলায় শুক্রবারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফেব্রুয়ারি মাসে আরও দুটি শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে রাজারহাট আবহাওয়া অফিস। এতে ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাসের কারণে কুড়িগ্রামের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
দিনে সামান্য কিছু সময় সূর্যের দেখা মিললেও অধিকাংশ সময় মিলছে না সূর্যের দেখা। দিনেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। কনকনে ঠান্ডায় নাকাল খেটে খাওয়া ও শ্রমজীবী মানুষ।
তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে জেলার পাঁচ শতাধিক চর ও দ্বীপ চরের মানুষসহ নি¤œবিত্ত ও ছিন্নমূল মানুষেরা। প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না। রাস্তা-ঘাট ও বাজারে কমেছে লোকজনের আনাগোনা।
খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকেই। এ কনকনে ঠান্ডায় গরম কাপড়ের অভাবে দুর্ভোগ বেড়েছে হতদরিদ্র পারিবারের শিশু ও বৃদ্ধদের।
অন্যদিকে টানা শীতে জেলার হাতপাতালগুলোতে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে।
যাত্রাপুর এলাকার ঘোড়ার গাড়িচালক আয়নাল মিয়া বলেন, ‘অতিরিক্ত ঠান্ডায় ঘোড়াগুলো দৌড়াতে পারছে না। আমারও প্রচুর ঠান্ডা লাগছে। কিন্তু কী করবো? মালামাল পরিবহন না করলে না খেয়ে থাকতে হবে।’
কুড়িগ্রাম শহরের ভ্যানগাড়িচালক জব্বার আলী জানান, ‘কয়েক দিন থেকে প্রচুর ঠান্ডা যাচ্ছে। শীতের কাপড় পরেছি। তবুও ভ্যানগাড়ি চালালে সেই কাপড় ভেদ করে ঠান্ডা বাতাস লাগছে। এতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।’
ভোগডাঙ্গা এলাকার খড়ি বিক্রেতা দুলাল মিয়া বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। একদিন খড়ি বিক্রি করতে না পারলে পেটে ভাত যায় না। শীতবস্ত্র কেনারও সামর্থ্য নেই। তাই হালকা কাপড়েই বেরিয়ে পড়েছি খড়ি বিক্রি করতে। খুবই ঠান্ডা লাগছে।’
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) কুড়িগ্রামের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে জেলাজুড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলমান রয়েছে। এছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসে আরও দুটি শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে দেশের একের পর এক এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে শৈত্যপ্রবাহ। রংপুর বিভাগসহ গোপালগঞ্জ, সীতাকু-, কুমিল্লা, শ্রীমঙ্গল, রাজশাহী, পাবনা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু এলাকা থেকে প্রশমিত হতে পারে। এ কারণে স্বাভাবিকভাবেই দেশে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। সেই সঙ্গে হতদরিদ্র মানুষের ভোগান্তিও বেড়েছে।
২৯ জানুয়ারি শুক্রবার দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা শুক্রবার আরও ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।
সকালে এসব তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
সকাল ৯টা পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।
সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এরপরের তিনদিনে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।
উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
এদিকে, কুড়িগ্রামে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। জেলায় শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফেব্রুয়ারি মাসে আরও দুটি শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
দিনের অধিকাংশ সময়ই মিলছে না সূর্যের দেখা। দিনেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। কনকনে ঠান্ডায় নাকাল খেটে খাওয়া ও শ্রমজীবী মানুষ।