কৃষকের পাশে দাঁড়ালেন কেন এক মাওলানা
মাওলাান সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। রাজনীতিতে তাঁর পারিবারিক ঐতিহ্য রয়েছে। তাঁর পিতাও সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলেন। তিনি দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন। সামাজিক সংগঠন, জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দের বরাবর নেতৃত্বে আছেন। ২০১৬-র নির্বাচনে জমিয়তের অনুমতি নিয়ে সিদ্দিকুল্লাহ তৃণমূলে গিয়েছিলেন এবং এমএলএ হন।
প্রশ্ন, মৌলানারা রাজনীতিতে আসতে পারেন না? পিডিসিআই ব্যানারে উনি নন্দিগ্রাম আন্দোলনে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান। সংরক্ষণ আন্দোলনেও নেতৃত্ব দেন। কিন্তু নিজের দিকে আঙুল তুলে বলা যায়, উনি যখন পিডিসিআই আর এআইডিইউএফ ব্যানারে লড়েছিলেন মুসলিমরা ভোট দিয়েছিল? দেয়নি। তাই জামানত বাজেয়াপ্তর মত ঘটনাও ঘটে।
আর জমিয়তের মাওলানা কংগ্রেস, সমাজবাদী, তৃণমূল সব ধরনের ধর্মনিরেপেক্ষ দলের ব্যানারে লড়েছে। কারণটা কি?
শুধু মুসলিম পরিচালিত দলের প্রতিক্রিয়ায় বিজেপি কেন আরও বড় হিন্দুত্ববাদী দল একত্রিত হবে। বড় উদাহরণ, সিএএ-এর আন্দোলন করে মুসলিমরা গ্রেফতার হয়ে জেলে পচছে। আর কৃষক আন্দোলনে সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করে বলছে, কৃষি আইন স্থগিত নয় পুরোপুরি রদ করতে চার সদস্যের কমিটি গঠিত হয়েছে।
তাই বলি বিচ্ছিন্ন হবেন না। সকলকে নিয়ে লড়তে হবে।
তিনি তৃণমূলের গুন্ডা, বদমাশদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। কয়েকদিন আগে পর্যবেক্ষক বীরভূমের অনুব্রত (কেষ্ট) মন্ডলকে তুলোধোনা করেন।
ওয়াইসির রাজ্যে খোদ হায়দরাবাদে তারই মিত্র টিআরএস বিধানসভা চত্বরে দুটি মসজিদ ভেঙেছে, তারও আগে রাস্তা চওড়া করতে গিয়ে হায়দরাবাদ কর্পোরেশন ২০০ বছরের পুরনো মসজিদ ভাঙে। সেটার কিছু হওয়ার আগেই বিধানসভার মসজিদ দুটো ভাঙে।
আসলে অবস্থা ভেদে ১৩-২৭% মুসলিম চিরকালই সংখ্যাগুরু যত টুকু হাতে তুলে দেবে ততটুকুই নিতে হবে। নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, হিমাচলে নাগরিক সুবিধাগুলি বজায় রাখলেও কাশ্মিরে ৩৭০, ৩৫-এ তুলে দিল রাজ্যটি মুসলিম সংখ্যাগুরু হয়েও কি করতে পারল? অন্তত কংগ্রেস যতদিন ক্ষমতায় ছিল এসব করেনি।
হ্যাঁ, ঠিক তাই। সিদ্দিকুল্লাহ কারও চোখে দালাল। দালাল কেন? না তৃণমূল করে। কিন্তু পিডিসিআই ও এআইডিইউএফ করে ভোট পান না।
এটাই ট্রাজেডি, ওয়াইসি বাবরি মসজিদ নিয়ে বড্ড ভোকাল। কিন্তু তার বন্ধু তিন তিনটি মসজিদ ভাঙলে চুপ।
ভোটে এদের জিতিয়ে লাভ কি? কংগ্রেস যতদিন ক্ষমতায় ছিল কাশ্মিরে ৩৭০/৩৫-এ তে হাত পড়েনি। মুসলিম ব্যক্তিগত আইনে হাত পড়েনি। একটা কল্যাণমূলক সরকার ছিল। মিড ডে মিল,সাধারণের আবাসন, সরকারি সংস্থা নিয়ে ভাবত, কৃষকদের নিয়ে ভাবত। ওয়াইসির প্রধান শত্রু কংগ্রেস। আর তার অক্ষম শক্তি শুধু লম্বা চওড়া কথা বলতে কাজে লাগে। আর হিন্দুদের এককাট্টা হতে সাহায্য করে।
কোলকাতায় এয়ারপোর্ট মসজিদ ভাঙার পরিকল্পনা চলছে। চৌধুরূী সাহেব জমিয়ত নিয়ে পাহাড়ের মত অটল। হায়দরাবাদ হলে কবে ভেঙে দিত আর ওয়াইসির মত ফ্যালফ্যাল করে দেখতেন। টিআরএস বিজেপির এজেন্ডা পূরণ করছে। সিদ্দিকুল্লাহর অনুগামী কম না। এখনও ময়দান কাঁপাতে পারেন। সাম্প্রতিক কৃষিবিল নিয়ে তাঁর আন্দোলন বেশ সাড়া ফেলে।
-চৌধুরী আতিকুর রহমান