খিদমাতে খলকের প্রকৃষ্ট উদাহরণ আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ দা.

খিদমাতে খলকের প্রকৃষ্ট উদাহরণ আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ দা.

  • মাওলানা মুহা. সারোয়ার আলম ভূঁইয়া

১৯৯১ সালের রমজান মাস। কুমিল্লায় ঘটে গেলো প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড়। কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার ৩নং দঃ দূর্গাপুরের সাতরা-চম্পকনগর – নোয়াপাড়ায় বাড়ীঘরের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়।তদানিন্তন সময়ে বৃহত্তর কুমিল্লার নানান সংগঠন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে গৃহ নির্মানের জন্য টিন, নগদ টাকা ও ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু তা যথেষ্ঠ ছিলো না।

সেবার হাফেজে কুরআন কর্মকর্তা ও সদস্যদের খতমে তারাবী সমাপ্তির কথা মাথায় রেখে, ২৭ রমজান কুমিল্লা চেম্বার অফকমার্স মিলনায়তনে ‘দারিদ্র বিমোচনে জাকাত প্রদানের গুরুত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিলো। প্রধান অথিতি হিসাবে দাওয়াত দেয়া হয়েছিল, এদেশের শীর্ষস্থানীয় লেখক-গবেষক-শাইখুল হাদীস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ দা.বা. কে। অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসলে অনেকেই ধারণা করেছিলেন এই ঝড়ের তাণ্ডবে এলোমেলো এই অজপাড়া গাঁয়ে এমন বড় একজন মানুষ হয়ত উপস্থিত হবেন না। একে তো রমজানের শেষ  দশক! আল্লামা মাসঊদ তায়াল্লুক মায়াল্লায়-ইনাবত ইলাল্লায় মগ্ন থাকবেন। দ্বিতীয় তো ঈদ কেন্দ্রিক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে জানজট। এ জানজটের ভয়াবহতা বৃদ্ধি করে দুটি ফেরীর ঘাট। ঢাকা থেকে আসলেই তো হবে না! আবার ফির যেতেও হবে।

সব ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণীত করে আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ দা.বা. কুমিল্লায়  উপস্থিত হয়ে সলাতুল আসর আদায় করলেন। যথা সময়ে মিলনায়তনে উপস্থিত হয়ে, খেদমতে খালক্ ও জনকল্যাণকর কাজের প্রয়োজনীয়তার উপর সারগর্ব আলোচনা পেশ করে, ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে নগদ টাকার চেক ও  প্রদান করলেন।

কুমিল্লায় আঞ্চলিক কিছু সংস্থার  সভা-সমিতি-সেমিনার- ওয়াজ মাহফিল-চক্ষু শিবির- পুস্তক প্রকাশ-ত্রাণ বিতরণ-মাদরাসা-মক্তব সহ সকল কার্যক্রম স্থবীর হয়ে যাওয়ার  পর এক দিন শুনতে পেলাম ‘ইসলাহুল মুসলিমীন পরিষদ’ নামক একটি সংগঠনের মাধ্যমে হুজুর সারা দেশে উল্লেখিত সমস্ত সেবামূলক কাজ আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন। কুমিল্লায় সেবার হুজুর ব্যাপক সাহায্য সহযোগিতা করলেন। ঘরবাড়ি তৈরী, দোকানপাট মেরামতসহ নানান ভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য সহযোগীতা করলেন। এরপর আমি যখন ঢাকায় এলাম তখন স্বচক্ষে দেখতে পুরো বাংলাদেশব্যাপী ইসলাহুল মুসলিমিনের মাধ্যমে কী পরিমাণ সেবা সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছেন। যৌতুকবিহীন গণবিবাহ, বিধবাদের বাস্তুসংস্থান, বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য ভ্যানগাড়ি, রিক্সা বিতরণ, পঙ্গুদের জন্য হুইলচেয়ার বিতরণ, ভাটি অঞ্চলে বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য গভীর নলকূপ স্থাপন, স্বাস্থ্যসম্মত সেনেটারী বাথরুম নির্মাণ, রোহিঙ্গা স্বরানার্থীদের ব্যাপক সহায়তা, বানভাসী মানুষ ও করোনাকালীন সময়ে অসহায় মানুষদের খাবার দাবারের আয়োজনসহ হাজারো সেবামূলক কাজের গৌরবান্বীত সঙ্গগঠন ইসলাহুল মুসলিমীন বাংলাদেশ। যার সফল ও সার্থক চেয়ারম্যান আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ দা.

আল্লাহ তা’য়ালা আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ দা.বা. কে হায়াতে তাইয়্যেবা তাবিলা দান করুক। হুজুরের সমস্ত সেবামুলক ও দ্বিনী প্রতিষ্ঠান গুলোকে উম্মতের কল্যাণে নিয়জিত রাখুক। আমীন।

লেখক, আলেম ও সাঙ্গঠনিক ব্যাক্তিত্ব

সম্পাদনা, আব্দুস সালাম ইবন হাশিম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *