গাছ কেটে নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা

গাছ কেটে নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা

দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় সামাজিক বনায়ন কার্যক্রমের আওতায় লাগানো গাছ কেটে সাবাড় করছে দুর্বৃত্তরা। কয়েকজন প্রভাবশালী উপকারভোগী দিনের পর দিন গাছ কেটে নিয়ে গেলও বন বিভাগ কোনো প্রকার ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তবে বন বিভাগ বলছে, গাছ চোরদের চিহ্নিত করা হয়েছে। খুব দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিরামপুরের চরকাই রেঞ্জ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সদর বিটের পলিপ্রয়াগপুর বনটির আয়তন আট হেক্টর।

২০০৫-২০০৬ সালে সামাজিক বনায়ন কার্যক্রমের অধীনে প্রতি হেক্টর দুই হাজার ৫০০ করে মোট ২০ হাজার আকাশমনি জাতের গাছ রোপন করা হয়। সামাজিক বনায়নের এ কার্যক্রমে মোট ৩২ জন উপকারভোগী রয়েছেন। যাদের দায়িত্ব এসব গাছ দেখাশোনার। কিন্তু বিধি অনুযায়ী  ১০ বছর পর এসব গাছ নিলামের মাধ্যমে কেটে বিক্রি করা হয়। এরপর গাছ বিক্রির মোট টাকার মধ্যে উপকারভোগী ৪৫ ভাগ, বন বিভাগ ৪৫ ভাগ এবং ১০ ভাগ টাকা পুনরায় গাছ রোপনের জন্য রাখা হয়। বনটির মধ্যে দিয়ে দিনাজপুর গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়ক।

গত মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বনের নয়াপাড়ার দিকে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গভীর নলকূপের পাশে একটি বড় আকাশমনির গাছ কাটার জন্য গোড়ার মাটি সরিয়ে রেখেছে দুর্বত্তরা। এ সময় কথা হয় দূর্গাপুর গ্রামের এক উপকারভোগীর স্ত্রীর সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, বনের গাছগুলো কয়েকজন প্রভাবশালী উপকারভোগীর নিয়ন্ত্রণে। ঝড়ে গাছ পড়ে গেলে তারা গাছের ডালপালাও নিতে পারেন না। অথচ দিনের পর দিন ওই প্রভাবশালী উপকারভোগীরা এসব গাছ কেটে বন উজাড় করছে।স্থানীয়রা জানান, বনের উত্তর পশ্চিম অংশে টাটকপুর নয়াপাড়া এলাকায় প্রায় এক একর জায়গার সব গাছ কেটে নিয়ে গেছে দুর্বত্তরা। এর মধ্যে টাটকপুর গ্রামের উত্তর পাশে প্রায় ১০ একর বাগানের গাছ কেটে উজার করা হয়েছে। এ ছাড়াও বনের মধ্যে থেকে পুরোনো কয়েকশত গাছ কেটে নিয়ে গেছে। গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার পর চিহ্ন মুছতে  গাছের  গোড়াগুলো তুলে ওই স্থানে মাটি চাপা দিয়ে রেখেছে ওই দুর্বত্তরা।

উকারভোগী কমিটির সভাপতি লুৎফর রহমান শাহ বলেন, নিয়ম অনুযায়ী গাছগুলো ১০ বছরের মধ্যে কাটার কথা। কিন্তু বিগত তিন বছর থেকে গাছগুলো কাটা  নিয়ে টালবাহানা চলছে। তাছাড়া আমি দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকায় গাছ কাটার বিষয়ে আমাকে কেউ কিছুই জানায়নি। আমি খোঁজ নেব। চরকুই গ্রামের বিদ্যুৎ পান্নাথপুর গ্রামের মিজানুর রহমানের অভিযোগ, চরকাই বন গবেষণা কেন্দ্রের ষ্টেশন  কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম সহ বন কর্মচারীদের যোগসাজশে কয়েক লাখ টাকার গাছ কেটে বিক্রি করা হয়েছে। এর মধ্যে এলাকার সচেতন মহল গাছ কাটার বিষয়টি জানতে পেরে এক ভ্যান চোরাই কাঠ আটক করে। এ নিয়ে এক ধরনের জটিলতার সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিলে বিরামপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়।

______________

patheo24/105

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *