পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: গাজা উপত্যকায় এক মাসের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে যাচ্ছে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। তবে হামাস দাবি করছে, যেসব শর্তে এই সাময়িক যুদ্ধবিরতি হবে, তার আলোকেই স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হবে- এমন নিশ্চিয়তা যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, মিসরকে দিতে হবে।
কয়েক সপ্তাহ ধরেই গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য ব্যাপক চেষ্টা চলছে। তবে শর্ত নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। ইসরাইল এর আগে দুই মাসের একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিল। তাতে শর্ত ছিল যে হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার, মোহাম্মদ আল-দেইফসহ ছয় সিনিয়র নেতাকে গাজা ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে হবে। কিন্তু হামাস তা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
হামাস স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ওপর জোর দিচ্ছে। তারা মনে করছে, বেসামরিক নাগরিকদের মুক্তি দিলে ইসরাইল আরো ভয়াবহ হামলা শুরু করবে। এমনকি সেনাবাহিনীর যেসব বন্দী রয়েছে, তাদের ব্যাপারেও তোয়াক্কা করবে না।
এছাড়া ইসরাইলের হাতে বন্দী সকল ফিলিস্তিনির মুক্তি দাবি করছে হামাস। এমনকি যারা ৭ অক্টোবরে হামলা চালাতে গিয়ে বন্দী হয়েছে, তাদের মুক্তিও দাবি করছে। তবে ইসরাইল তা মানবে বলে মনে হচ্ছে না।
হামাস মনে করছে, ইসরাইল ঠিক এখনই যুদ্ধবিরতি চাচ্ছে না। খান ইউনিসে তাদের অভিযান শেষ হওয়ার পরই তারা যুদ্ধ থামাতে চায়।
গাজায় হামাসের হাতে এখনো ১৩২ জন বন্দী রয়েছে। তবে তাদের মধ্যে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে ইসরাইল মনে করছে।
গতকাল গাজা যুদ্ধে সবচেয়ে কঠিন দিন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
তিনি বলেন, চলমান যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সবচেয়ে কঠিন দিন ছিল গতকাল। এই দিন আমাদের বেশ কয়েকজন বীরদের জীবন উৎসর্গ করতে হয়েছে। আমরা তাদের রক্তের প্রতিশোধ নিয়েই ছাড়ব। তাই হামাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাব।
এদিকে, চার মাসের চলমান যুদ্ধে গাজায় থেকেও ইসরাইলের চোখের আড়ালে রয়েছে হামাস নেতারা। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টিভি চ্যানেল সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান গাজা যুদ্ধের ব্যাপ্তি চার মাস হতে চলল। তবুও হামাসের সিনিয়র নেতাদের ধরতে ব্যর্থ হয়েছে ইসরাইল। অবশ্য চলতি মাসে বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হামাসের এক শীর্ষ কমান্ডার নিহত হয়। সেটি ব্যতিক্রম।
ইসরাইলের ধারণা, এখনো হামাসের অন্তত ৭০ শতাংশ যোদ্ধা শক্তি অক্ষত রয়েছে।
ইসরাইল প্রস্তাব দিয়েছে যে হামাসের সিনিয়র নেতারা যদি গাজা ত্যাগ করে, তাহলে একটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি হতে পারে। ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাজ করে, এমন দুই কর্মকর্তা সিএনএনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে হামাসের পক্ষ থেকে এমন প্রস্তাব গ্রহণের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
এ বিষয়ে মার্কিন ও আন্তর্জাতিক কর্মকর্তারা বলেছেন, আলোচনার প্রতি ইসরাইল ও হামাস উভয়েরই আকর্ষণ রয়েছে। কিন্তু তাদের মাঝে কোনো চুক্তি হতে পারে বলে মনে হচ্ছে না।