পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়েছে। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৫ হাজার। ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ রয়েছে আরও ৭ হাজার।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) ছিল গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ৮২তম দিন। এদিন গাজার হামাস সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হতাহতের নতুন তথ্য প্রকাশ করে।
নতুন তথ্য মতে, গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২১ হাজার ১১০ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৫৫ হাজার ২৪৩ জন।
নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত নিহত শিশুর সংখ্যা ৮ হাজার ৮০০। আর নিহত নারী ৬ হাজার ৩০০ জন। এছাড়া নিহতদের ৩ হাজার ১১১ জন চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মী। ৪০ জন নিরাপত্তা রক্ষী এবং শতাধিক সাংবাদিক।
যুদ্ধবিরতি ও বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষায় জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার চাপ থাকা সত্ত্বেও গাজায় হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বুধবারের বিবৃতি অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় ১৯৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩২৫ জন। গাজার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় ৪ হাজার ৩৭ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২০৯ জন কর্মীও নিহত হয়। আহত হয়েছে ৭ হাজার ২৫৯ শিক্ষার্থী ও ৬১৯ শিক্ষক। নির্বিচার হামলায় গাজায় ৩৫২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ১১৫টি মসজিদ ও তিনটি গির্জা ধ্বংস হয়েছে। ২৩টি হাসপাতাল ও ৫৩টি মেডিকেল সেন্টার অকেজো হয়ে গেছে।
গাজার ফিলিস্তিনিদের মিসরের সিনাই মরুভূমিতে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলছেন ইসরায়েলের কয়েকজন রাজনীতিক। তারই অংশ হিসেবে মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েল হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই দুই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ১৯ লাখ মানুষ, যারা বেশিরভাগই গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে পালিয়ে এসেছেন। তবে ফিলিস্তিনিদের তাদের নিজ ভূমি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার কোনো পদক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না বলে ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে মি্সর ও জর্ডান।
এদিকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলি বাহিনীর পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে শুরু থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা করা হচ্ছিল। এতে নতুন মাত্রা যোগ হয় লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের মতো ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর জড়িয়ে পড়ায়। সবশেষ সিরিয়ায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরানের শীর্ষস্থানীয় এক সেনা কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে।