গাজায় প্রতিদিন সীমিত জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি ইসরায়েলের

গাজায় প্রতিদিন সীমিত জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি ইসরায়েলের

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: জাতিসংঘের চাহিদা মেটানোর জন্য যুদ্ধকবলিত, অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় প্রতিদিন দুই ট্রাক জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েলের যুদ্ধ মন্ত্রিসভা। শুক্রবার ইসরায়েলি এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ওয়াশিংটন থেকে অনুরোধ আসার পর সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ কর্মকর্তা। এদিকে ইসরায়েল-হামাসকে বন্দি বিনিময়ের আহ্বান জানিয়েছেন বাহরাইনের যুবরাজ সালমান বিন হামাদ আল খলিফা।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রতি দুই দিনের জন্য প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার লিটার করে জ্বালানি প্রবেশ অনুমোদন করা হবে। তিনি জানান, এসব জ্বালানির বেশির ভাগই ত্রাণ সরবরাহকারী ট্রাকের জন্য ব্যবহার করা হবে, পাশাপাশি জাতিসংঘকে পানি ও জঞ্জাল সাফাই করার কাজে সহায়তা করতে কিছু দেওয়া হবে। বাকিটা মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা সচল করতে ব্যবহার করা হবে। গাজায় জ্বালানির অভাবে এসব পরিষেবা বন্ধ হয়ে আছে। গাজায় টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট পরিষেবা জোগানো কোম্পানিটি শুক্রবার জানায়, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য নিযুক্ত জাতিসংঘের সংস্থা আনরার মাধ্যমে কিছু জ্বালানি পাওয়ার পর তাদের পরিষেবা ফিরতে শুরু করেছে।

মার্কিন ঐ কর্মকর্তা জানান, এই জ্বালানি সমঝোতা এগিয়ে নেওয়ার জন্য ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ওপর উল্লেখ করার মতো চাপ সৃষ্টি করেছিল। তিনি জানান, সপ্তাহ দুয়েক আগেই নীতিগতভাবে এই চুক্তির বিষয়ে সমঝোতা হয়েছিল, কিন্তু দুটি কারণে ইসরায়েল এটি অনুমোদন করতে দেরি করে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রকে জানায়, গাজায় দক্ষিণাংশে জ্বালানি ফুরিয়ে যায়নি আর তারা দেখতে চান, আগে জিম্মিদের মুক্ত করতে তারা কোনো দরকষাকষি করতে পারে কি না। বৃহস্পতিবার আনরার প্রধান সতর্ক করে বলেছিল, জ্বালানির অভাবে সংস্থাটি তাদের সব কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বাধ্য হতে পারে। সর্বশেষ প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, তাদের ‘মৌলিক মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে প্রতিদিন ১ লাখ ৬০ হাজার লিটার জ্বালানি দরকার’। ইসরায়েল প্রতিদিন যে পরিমাণ জ্বালানি গাজায় পাঠানোর অনুমতি দিলেও এই চাহিদা তার দ্বিগুণ।

এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অনুমোদিত নতুন জ্বালানি রাফা ক্রসিং দিয়ে জাতিসংঘের মাধ্যমে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে প্রবেশ করে বেসামরিক জনগণের কাজে লাগানো হবে, এগুলো হামাসের কাছে পৌঁছবে না। এসব জ্বালানি পানি সরবরাহ, পয়োনিষ্কাশন ও জঞ্জাল সাফের কাজে ‘ন্যূনতম’ সমর্থন জোগাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরো বলেন, অঞ্চল জুড়ে মহামারি ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এদিকে উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্র বাহরাইনের ক্রাউন প্রিন্স ইসরায়েল ও হামাসকে বন্দি বিনিময় করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মনে করছেন এর মাধ্যমে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধের অবসান ঘটতে পারে। সংকট সমাধানে যুবরাজ সালমান বিন হামাদ আল খলিফা দ্বিরাষ্ট্র প্রসঙ্গ তুলে বলেন, এর জন্য যুক্তরাষ্ট্র অপরিহার্য। তিনি বলেন, এখন সরাসরি কথা বলার সময়। হামাসকে গাজায় জিম্মি করা ইসরায়েলি নারী ও শিশুদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এর বিনিময়ে ইসরায়েলের প্রতি তিনি আহ্বান জানান, তাদের জেলে থাকা বেসামরিক বন্দি, নারী ও শিশুদের মুক্তি দেওয়ার।

তিনি বলেন, এর উদ্দেশ্য হলো মানুষ যাতে খাবার জোগাড় করতে পারে, মৃতদের দাফন করতে পারে। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো মানুষ যাতে প্রশ্ন করতে পারে যে কোনো ব্যর্থতা থেকে আজকের এই সংকটের শুরু। ২৪০ জনেরও বেশি জিম্মির মুক্তির জন্য হামাস এবং ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মধ্যে মধ্যস্থতার একটি প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিচ্ছে কাতার। সুন্নি-শাসিত বাহরাইন ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আব্রাহাম চুক্তির অধীনে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *