গাজার হাসপাতালগুলোও এখন যুদ্ধক্ষেত্র, মৃত্যুর মুখে শিশুরা

গাজার হাসপাতালগুলোও এখন যুদ্ধক্ষেত্র, মৃত্যুর মুখে শিশুরা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: ইসরায়েলি বিমান হামলায় বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার একমাত্র নিরাপদ স্থান বিবেচিত হাসপাতালগুলোও পরিণত যুদ্ধক্ষেত্রে। সেখানে চিকিৎসাধীন শিশুসহ শত শত রোগী আর আশ্রয় নেওয়া নিরুপায় মানুষের জীবন হুমকির মুখে।

মৃত্যুর মুখে হাসপাতালের শিশুরাবিদ্যুতের অভাব, গোলার আঘাতসহ নানা কারণে গাজা সিটির বৃহত্তম হাসপাতাল আল-শিফা কার্যত অচল। সেখানকার নবজাতক শিশুরা মৃত্যুর মুখে।

জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় নগরীর আরেক হাসপাতাল আল-কুদসের কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে গেছে। 
 

ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলার মুখে হাসপাতালে থাকা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা। তিনি বলেন, আল-শিফার শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রের লাইফ সাপোর্ট মেশিন অচল হয়ে পড়ায় কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। ৩৭টি শিশু মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বিদ্যুিবভ্রাট ও জ্বালানির অভাবে অস্ত্রোপচার করতে না পারায় আহত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

হাসপাতালগুলোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ জাকুত বলেছেন, শিশুসহ প্রায় সাড়ে ছয় শ রোগীর জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে।

এদিকে আল-শিফা হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ও আশপাশে কয়েক ডজন লাশ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের এক কর্মকর্তা।

গাজার হাসপাতালগুলোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ জাকুত বলেন, ‘আমরা লাশগুলো দাফন করতে বলেছিলাম।

কিন্তু কেউ আল-শিফা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে গেলেও গুলি চালানো হচ্ছে।’
 

আল-শিফা হাসপাতালের প্রধান শল্যচিকিৎসক মারওয়ান আবুসাদা বলেন, হাসপাতালের চারপাশে গোলাগুলি ও বোমা বর্ষিত হচ্ছে। কেউ বের হতে বা ঢুকতে পারছে না। যারা বের হওয়ার চেষ্টা করেছে, তারা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। কেউ মারা গেছে, কেউ আহত হয়েছে।

শিফা হাসপাতালের চার পাশে হামাসের সঙ্গে সংঘাত চালিয়ে যাওয়া ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, তারা চিকিৎসাধীন শিশুদের নিরাপদে অন্য হাসপাতালে সরিয়ে নিতে সহায়তা করবে।

হাসপাতাল থেকে উচ্ছেদের অভিযোগ

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল-কাইলা বলেন, হাসপাতালে থাকা আহত ব্যক্তি ও রোগীদের জোর করে রাস্তায় ফেলে অনিবার্য মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। হাসপাতালগুলোতে বিপর্যয় শুরু হয়েছে। চিকিৎসার অভাবে রোগীরা মারা যাচ্ছে। আল-রানতিসি ও টার্কিশ হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া তিন হাজার রোগীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, আল-শিফা হাসপাতালে কর্মরত নিজেদের কর্মীদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। লড়াইয়ের মধ্যে আটকে পড়া কর্মী ও রোগীদের নিরাপত্তা নিয়ে সংস্থাটি উদ্বিগ্ন।

ইসরায়েলের অভিযোগ, আল-শিফা হাসপাতালের নিচে থাকা সুড়ঙ্গে হামাসের আস্তানা আছে। তবে বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে হামাস।

 

সূত্র : আলজাজিরা, বিবিসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *