গাজার হাসপাতাল হামলার ঘটনায় ‘হতভম্ব’ জাতিসংঘ, কঠোর নিন্দা

গাজার হাসপাতাল হামলার ঘটনায় ‘হতভম্ব’ জাতিসংঘ, কঠোর নিন্দা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গাজায় হাসপাতালে হামলা চালিয়ে শত শত বেসামরিক নাগরিককে হত্যার ঘটনায় তিনি ‘হতভম্ব’। এ হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়ে হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন তিনি।

ইউএন নিউজে বলা হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (টুইটার) দেওয়া পোস্টে আন্তোনিও গুতেরেস আরও বলেছেন, আন্তর্জাতিক আইনে সব হাসপাতাল ও চিকিৎসাকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার কথা বলা আছে।

স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে গাজা সিটির আল-আহলি আল-আরবি হাসপাতালে বিমান হামলা হয়। এ ঘটনায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনের সংগঠন হামাস ও ইসরায়েল একে অপরকে দোষারোপ করছে।

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী এ বিমান হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে, এক্সে দেওয়া পোস্টে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী দাবি করেছে, ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামাসের ছোড়া রকেটই ওই হাসপাতালের ওপর পড়েছে।

এক্সে দেওয়া পোস্টে গুতেরেস লিখেছেন, আন্তর্জাতিক আইনে সব হাসপাতাল ও চিকিৎসাকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার কথা বলা আছে।

এর আগে গতকাল জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ পরিচালিত একটি স্কুলে হামলার ঘটনায়ও নিন্দা জানিয়েছেন গুতেরেস। তাঁর মুখপাত্র এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকারপ্রধান ভল্কার তুর্ক হাসপাতালে হামলার ঘটনাকে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ বলে উল্লেখ করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে পুরোপুরি জানতে পারিনি। তবে এটা পরিষ্কার যে অবিলম্বে সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে।’

স্থল অভিযান শুরু করার হুমকি দিয়ে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দাদের এলাকা ছেড়ে অন্য জায়গায় সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। এমন অবস্থায় গৃহহীন বেসামরিক নাগরিকদের অনেকে হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস লিখেছেন, ‘ডব্লিউএইচও এ হামলার কঠোর নিন্দা জানাচ্ছে। অবিলম্বে বেসামরিক নাগরিক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি। স্থানীয়দের এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা–ও প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।’

জাতিসংঘের মানবাধিকারপ্রধান ভল্কার তুর্ক যেকোনো উপায়ে হোক হাসপাতালগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনায় দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলে হাজার হাজার রকেট ছোড়ে হামাস। একই সঙ্গে সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে হামলা চালান হামাসের যোদ্ধারা। এ সময় তাঁরা বিদেশি নাগরিকসহ অনেক ইসরায়েলিকে আটক করে গাজায় নিয়ে যান। জবাবে ৭ অক্টোবর থেকেই পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এর পর থেকে তারা গাজায় টানা বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। অবরুদ্ধ গাজায় দেখা দিয়েছে চরম মানবিক সংকট।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *