গুজরাট গণহত্যার বিচার চাইলেন কামরুজ্জামান

গুজরাট গণহত্যার বিচার চাইলেন কামরুজ্জামান

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ২০০২ সালে গুজরাটে ভয়াবহ মুসলিমবিরোধী দাঙ্গার সুবিচার চেয়েছেন ‘সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন’র সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান।

মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) সংখ্যালঘু দিবসকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কোলকাতায় এক আলোচনা সভায় ভাষণ দেয়ার সময় ওই দাবি জানান তিনি।

দীর্ঘ ৩৪ বছর পরে সংখ্যালঘু শিখবিরোধী ভয়াবহ দাঙ্গায় জড়িত অপরাধীদের সাজা হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টকে ধন্যবাদ জানিয়ে মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা আশা করছি এভাবে গুজরাটে মুসলিম গণহত্যার বিচার হবে এবং অপরাধীরা শাস্তি পাবে।’

ওই আলোচনাসভায় বঙ্গীয় খ্রিস্টীয় পরিষেবার সভাপতি হেরোদ মল্লিক বলেন, ‘বর্তমান ভারতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার সংকট দেখা দিয়েছে। গেরুয়া বাহিনী প্রকাশ্যে সংখ্যালঘুদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে। দেশের প্রশাসন এই তাণ্ডবকারীদের কাছে আত্মসমর্পণ করছে এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের!’

হেমেন্দু বিকাশ চৌধুরী বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের অধিকার কাগজপত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবে সংখ্যালঘুদের প্রতিষ্ঠান চালানোর স্বাধীন অধিকারটুকুও বিভিন্নভাবে সঙ্কুচিত করা হচ্ছে। গয়ার বৌদ্ধ মন্দির পরিচালনার দায়িত্ব হিন্দু জেলাপ্রশাসক ছাড়া অন্যকে দেওয়া হয় না বলে উল্লেখ করে তিনি এ নিয়ে আক্ষেপ করেন।

সংখ্যালঘু দিবসকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন, বেঙ্গল বুদ্ধিস্ট এসোসিয়েশন, বঙ্গীয় খ্রিস্টীয় পরিসেবা ও শিখ মিশনের যৌথ উদ্যোগে সংখ্যালঘু বুদ্ধিজীবী কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। কোলকাতার বৌদ্ধ সভাঘরে অনুষ্ঠিত ওই সভায় সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, বঙ্গীয় খ্রিস্টিয় পরিসেবার সভাপতি হেরদ মল্লিক, বেঙ্গল বুদ্ধিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি হেমেন্দুবিকাশ চৌধুরী, শিখ মিশনের উত্তর ভারতের সম্পাদক জগমোহন সিং গিল, দলিত নেতা শরদিন্দু বিশ্বাস, মাওলানা আনোয়ার হোসেন কাশেমি, সমাজসেবী কামরুল চৌধুরি, খলিল মল্লিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ঘটনার সূত্রপাত ২০০২ এর ২৭ ফেব্রুয়ারি– গুজরাটের SABARMATI EXPRESS নামে একটি ট্রেনে হামলায় ভারতের ৫৯ জন মারা যায়। Wikipedia এর তথ্য অনুসারে ২৫৪ জন। এ ঘটনায় কোন প্রমাণ ছাড়াই মুসলমানদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়। অথচ পরবর্তীতে ‘নতুন নানাভাতি’ তদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে বেরিয়ে আসে যে, ভারতের মুসলমানদের উপর হামলা চালানোর পূর্ব-ষড়যন্ত্র হিসেবেই এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা সাজানো হয়, যা উগ্র হিন্দু সন্ত্রাসী করেছিল এবং সেটা মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশেই হয়েছিল। সেটাকেই ছুতো করে মাসখানেক ধরে সাম্প্রদায়িক উগ্র হিন্দুরা মুসলিমদের উপর হামলা চালায়। শুরু হয় দাঙ্গা।

সংখ্যা লঘু হওয়াতে মুসলিমদের উপর হিন্দুদের নির্যাতন মাত্রা ছাড়ায়। নির্যাতনের ধরন সব যুগের সব বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। মুসলিমদের ব্যাসায়িক প্রতিষ্ঠান,বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়। অধিকাংশ মুসলিমদের পুরিয়ে মারা হয়েছে। শত শত মুসলিম নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। শিশুদেরকেও তারা ছাড় দেয়নি। প্রায় লাখখানেক মুসলিম তাদের বাড়ি ঘর ছেরে পালিয়ে যায়। এই নির্যাতনে RSS সহ হিন্দু উগ্র সন্ত্রাসীরা অংশ নেয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *