গো-রক্ষা দাঙ্গায় হত্যার বিচার হওয়ায় আদালতকে মাহমুদ মাদানীর অভিনন্দন
অপরাধীদের শাস্তিতে কেবল নির্যাতিতরাই শান্তি পায় না, এটি মনুষ্যত্বের বিজয় : মাহমুদ মাদানি
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : নয়াদিল্লী (২১ ডিসেম্বর): ঝাড়খণ্ডের লাতিহারে দুই বছর আগে গো-রক্ষার নামে এক দাঙ্গায় আনসারি নামক এক ব্যবসায়ী এবং তার নয় বছর বয়সী ছেলে ইমতিয়াজ মামলায় জেলা কোর্ট অভিযুক্ত অপরাধীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ ঘটনায় আনন্দ প্রকাশ করেছেন জমিয়তে উলামা হিন্দে জেনারেল সেক্রেটারি সায়্যিদ মাহমুদ মাদানি। তিনি আদালতের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) এই মামলার শুনানিতে ঝাড়খণ্ডের লাতিহারে জেলা জজ কোর্টের প্রথম শ্রেণী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুশেশ কুমার আট অপরাধীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।অপরাধীরা হলেন- (মাথাইলশ প্রসাদ সোহো, পরামুদ কুমার সোহো, মনোজ কুমার সোহো, ওশশ সোহো, মনোজ সোহো, অরুণ সাও, বিশ্ব তিওয়ারি, মধু সোনি) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাথে অপরাধী প্রত্যেককেই ২৫০০০ টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো এক বছর সাজা ভোগের আদেশ দেন আদালত।
মাওলানা মাদানী বলেন, গোরক্ষার নামে সংঘটিত কোন নৃশংস মামলায় অপরাধীদের শাস্তি হলে কেবল নির্যাতিতরাই শান্তি পায় না বরং এর দ্বারা মনুষ্যত্বের বিজয় হয়। এসময় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন এই ঘটনা সাম্প্রদায়িক দল পূজারিদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত। এই ঘটনা তাদের জন্য শিক্ষা হয়ে থাকবে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৮ মার্চ বালু মাথ ব্রেঞ্জ গ্রামের ব্যাবসায়ী আনসারি এবং তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে ইমতিয়াজকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ভেতর হত্যা করা হয়। এসময় আনসারি ও তার ছেলে তাদের ব্যবসার গরু নিয়ে চিত্রা জেলার একটি হাঁটে যাচ্ছিলেন। সেসময় উগ্র গোষ্ঠী তাদেরকে প্রচণ্ড মেরে আধমরা করে গাছে লটকে রাখে। দীর্ঘ দু’বছর পর তারই বিচার করেছে আদালত।
আদালতের এ সিদ্ধান্তকে মাহমুদ মাদানী স্বাগত জানিয়ে বলেন, আদালতের সিদ্ধান্তটি খুবই প্রয়োজন ছিলো কারণ, ভারতে গো-রক্ষার নামে সাম্প্রদায়িক দল পূজারিদের দহরম মহরম বেশ বেড়ে গেছে। তারা আইনের তোয়াক্কা না করে নিজেরাই নিজেদেরকে আইনের ঊর্ধ্বে মনে করে। আমাদের বিশ্বাস এই রায় এসব ফেরকা পূজারীদের জন্য প্রমাণ হয়ে থাকবে। এবং নির্যাতিতদের জন্য স্বস্তির কারণও বটে। আদালতের উপর তাদের বিশ্বাস ও ভরসা অটুট থাকবে।
মাহমুদ মাদানী বলেন, আদালতের এ রায়ে আমরা খুশি। কিন্তু এখনো এই হত্যার সাথে জড়িত আরো বেশ ক’জন পলাতক রয়েছে। তাদেরকেও অতিসত্বর গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনা হোক এবং এই শাস্তি প্রদান করা হোক। এসময় রাজস্থান ও উত্তর প্রদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধিয়ে মুসলিমদের হত্যার বিচারের দাবিও জানিয়েছেন জমায়তে উলামা হিন্দের এই নেতা।
অনুবাদ ও গ্রন্থনা : কাউসার মাহমুদ
সম্পাদনা : মাসউদুল কাদির
তথ্যসূত্র : ডেইলি হামারা সামাজ, দিল্লী