ঘূর্ণিঝড় ফ্রেডিতে মৃত্যু ৩০০ ছাড়াল

ঘূর্ণিঝড় ফ্রেডিতে মৃত্যু ৩০০ ছাড়াল

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ঘূর্ণিঝড় ফ্রেডির আঘাতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০০ ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। মোজাম্বিক এবং মালাউইয়ের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির পরিমাণ জানতে বেশ কয়েক দিন সময় লেগে যাবে।

ফ্রেডি গত শনিবার এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে আঘাত হানে। এরপর গত সোমবার মোজাম্বিক ও মালাউইতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। ভয়াবহ এই ঘূর্ণিঝড়ে সর্বশেষ ১০০ জনের মৃত্যুর খবর শোনা গেলেও বর্তমানে তা বেড়ে গেছে। আগে জানা গিয়েছিল, আহত হয়েছে কমপক্ষে ৫৮৪ জন ও নিখোঁজ রয়েছেন ৩৭ জন।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, দক্ষিণ গোলার্ধে রেকর্ড হওয়া সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়গুলোর মধ্যে ফ্রেডি অন্যতম।

ঝড়টি শনিবার মোজাম্বিকের মধ্যাঞ্চলে তাণ্ডব চালিয়ে বহু ভবনের ছাদ উড়িয়ে নেয় এবং এর প্রভাবে দেশটির ক্যালেমানা বন্দরের আশেপাশের এলাকায় ব্যাপক বন্যা দেখা দেয়। এরপর এটি মালাউইর দিকে এগিয়ে গিয়ে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণ হয়, এতে সেখানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে।

মোজাম্বিকের জাম্বেজিয়া প্রদেশে কমপক্ষে ৫৩ জন মারা গেছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ গত বুধবার জানায়। এটা তাদের আগের গণনার দ্বিগুণ। মালাউই এখন পর্যন্ত ২২৫ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। আরো শতাধিক আহত হয়েছে এবং কিছু মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছে।

দ্বিতীয়বার মোজাম্বিকে আঘাত হানার আগে এই ঘূর্ণিঝড়ে মাদাগাস্কার এবং মোজাম্বিকে প্রায় ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। অবিরাম বৃষ্টি এবং বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যার কারণে এই সপ্তাহে অনুসন্ধান এবং উদ্ধার প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করেছে। ঝড়ের কারণে মারাত্মক বন্যা দেখা দিয়েছে। মৃতদেহ এবং ঘরবাড়ি মাটির নীচে চাপা পড়ে রয়েছে এবং রাস্তা ঘরবাড়ি সব পানিতে ভেসে গেছে।

মালাউইয়ান রাষ্ট্রপতি লাজারাস চাকভেরা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১৪ দিনের শোক পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। এ ছাড়া সরকার ১.৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই ঝড়ে ২০ হাজারের বেশি পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখনো উদ্ধার কার্যক্রম নিয়ে সেখানে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা তাই দলে দলে উদ্ধার কাজে এগিয়ে এসেছে। কর্তৃপক্ষের সাহায্যের অপেক্ষায় না থেকে নিজেরাই মৃতদেহ উদ্ধার করছে।

ঝড় থেকে বেঁচে যাওয়া এক ব্যক্তি জানিয়েছে, ‘কোনো উদ্ধারকারী দল নেই, কোনো পুলিশ নেই, কোন সরকারি কর্মকর্তাও নেই।’ তিনি নিজেই তার পরিবারের নিখোঁজ চার সদস্যের সন্ধান করছেন বলে জানান সংবাদ সংস্থা আল জাজিরাকে।

তিনি আরো বলেন, ‘এখানে শুধু সাধারণ মানুষ, ওই মানুষ যারা অন্য মানুষকে হারিয়েছে।’সেখানে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে। কোনো ত্রাণ সামগ্রীও ক্ষতিগ্রস্থ মানুষরা পায়নি বলে জানা যায়।

  • সূত্র: আল জাজিরা

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *