চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির শোক, পাশে থাকার নির্দেশ

চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির শোক, পাশে থাকার নির্দেশ

পাথেয় রিপোর্ট : পুরান ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।। এছাড়া অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার সকালে পৃথক শোকবার্তায় তারা এ মর্মান্তিক ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। আহতদের আশু সুস্থতাও কামনা করেন তারা।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৃহস্পতিবার সকালে গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন। প্রেস সচিব বলেন, “আগুনে আহতদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এবং নিহতদের পরিবারকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।”

প্রধানমন্ত্রী অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানিতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি নিহতদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বর্তমানে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা এইচ এম এরশাদও এই অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক প্রাণহানিতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের একটি ভবন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে স্থানীয়রা জানান। পরে তা পাশের ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ রাত ৩টার দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ২০০ কর্মী। তবে ছোট গলি ও পানির স্বল্পতার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রচণ্ড বেগ পেতে হয়।

আগুন নিয়ন্ত্রণে এখনো কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৪০টি ইউনিট। তবে আগুন লাগার প্রকৃত কারণ এখনো জানা যায়নি।

এদিকে গুনে দগ্ধ অন্তত ৭০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়েছে।

চুড়িহাট্টায় ফায়ার সার্ভিসের অস্থায়ী তথ্য কেন্দ্র থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেখান থেকে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত তাদের উদ্ধার অভিযানে ৭০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও সার্চিং অভিযান চলছে। প্রতিটি বিল্ডিংয়ের প্রতিটি কক্ষ তল্লাশি শেষে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে পুরো তথ্য দেয়া সম্ভব হবে।

এখন পর্যন্ত ৭০ জনের উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী। মৃত ব্যক্তির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। এ সময় ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আইজিপির সঙ্গে ছিলেন।

ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন জানান, এখন পর্যন্ত ২৬ জনের মরদেহ তারা শনাক্ত করেছেন। সেগুলো তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন। আহত ও দগ্ধ ৪১ জন সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এর আগে, ভোররাত ৪টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (ডেভেলপমেন্ট) জুলফিকার বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২টি ব্যাগে ১২টি মরদেহ আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে।

৪টা ১০ মিনিটের দিকে মরদেহগুলো অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আনা হয়।

মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক জুলফিকার। তিনি বলেন, আমাদের সার্চিং অপারেশন চলছে। আগুনটা রাতে লেগেছিল। সেসময় অনেকে ঘুমিয়ে পড়ছিলেন। এ কারণে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহমদ খান এর আগে জানান, রাত ৩টা দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন পর্যন্ত নয় থেকে ১০ জনের মরদেহ বিক্ষিপ্তভাবে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা এখনও নিশ্চিত নয়। এটি বাড়তেও পারে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *