পাথেয় রিপোর্ট : রাজধানী ঢাকার চকবাজার এলাকায় রাজ্জাক ভবনে গতকাল বুধবার রাতে লাগা আগুনের ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলছে। চকবাজারের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের ভবনগুলোতে লাগা ভয়াবহ আগুনে দগ্ধ অন্তত ৭০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়েছে।
চুড়িহাট্টায় ফায়ার সার্ভিসের অস্থায়ী তথ্য কেন্দ্র থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সেখান থেকে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত তাদের উদ্ধার অভিযানে ৭০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও সার্চিং অভিযান চলছে। প্রতিটি বিল্ডিংয়ের প্রতিটি কক্ষ তল্লাশি শেষে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে পুরো তথ্য দেয়া সম্ভব হবে।
এখন পর্যন্ত ৭০ জনের উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী। মৃত ব্যক্তির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। এ সময় ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আইজিপির সঙ্গে ছিলেন।
ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন জানান, এখন পর্যন্ত ২৬ জনের মরদেহ তারা শনাক্ত করেছেন। সেগুলো তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন। আহত ও দগ্ধ ৪১ জন সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এর আগে, ভোররাত ৪টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (ডেভেলপমেন্ট) জুলফিকার বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২টি ব্যাগে ১২টি মরদেহ আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে।
৪টা ১০ মিনিটের দিকে মরদেহগুলো অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আনা হয়।
মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক জুলফিকার। তিনি বলেন, আমাদের সার্চিং অপারেশন চলছে। আগুনটা রাতে লেগেছিল। সেসময় অনেকে ঘুমিয়ে পড়ছিলেন। এ কারণে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহমদ খান এর আগে জানান, রাত ৩টা দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন পর্যন্ত নয় থেকে ১০ জনের মরদেহ বিক্ষিপ্তভাবে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে মৃতের সংখ্যা এখনও নিশ্চিত নয়। এটি বাড়তেও পারে।
বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের একটি ভবন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে স্থানীয়রা জানান। পরে তা পাশের ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ রাত ৩টার দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ২০০ কর্মী। তবে ছোট গলি ও পানির স্বল্পতার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রচণ্ড বেগ পেতে হয়।