পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তির দাফন কাজে সহায়তা করায় ফেনীর সোনাগাজীর চাকরিচ্যুৎ মসজিদের ইমামকে স্বপদে বহাল করতে লিগ্যাল নোটিস দেয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সোনাগাজীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌর মেয়র, পৌর কাউন্সিলর, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও মতিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতি এ লিগ্যাল নোটিস প্রদান করেন।
স্বল্প সময়ের মধ্যে ইমামকে স্বপদে বহাল করতে সোমবার সকালে তিনি লিগ্যাল নোটিস প্রদান করেছেন। তবে মসজিদের ইমাম এখনো ছুটিতে রয়েছেন বলে দাবি করেছেন মসজিদ পরিচালনা কমিটি।
ইমাম মাওলানা নূর উল্যাহ বলেছেন, আগামী বৃহস্পতিবার বিকালে মসজিদ পরিচালনা কমিটি, মুতাওয়াল্লী ও স্থানীয় মুসল্লীদের নিয়ে যৌথ সভায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে তাকে জানানো হয়েছে।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির অনুমতি ছাড়া করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তির দাফন কাজে সহায়তা করায় সোনাগাজী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের বক্সআলী ভূঁইয়া বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা নূর উল্যাহকে চাকরিচ্যুৎ করার অভিযোগ উঠে।
এ খবরে সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সর্বত্রই নিন্দার ঝড় উঠে!
দীর্ঘ ছয় বছর ওই মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও গত শুক্রবার জুমার নামাজ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়ে।
সোনাগাজীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিগ্যাল নোটিস প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কাজী শফিউল ইসলামকে বিষয়টি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি ইমাম, মসজিদ কমিটির সভাপতি, সহ-সভাপতি ও মুতাওয়াল্লীসহ স্থানীয় মুসল্লিদের লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করেছেন।
মসজিদ কমিটি ইমামকে চাকরিচ্যুৎ করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
সোনাগাজী পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন লিগ্যাল নোটিস প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য আলোচনা চলছে। ইমাম স্বপদে বহাল থাকবেন।
ইমাম মাওলানা নূর উল্যাহ সাংবাদিকদের কছে অভিযোগে বলেন, গত ১৭ জুন বুধবার বিকালে উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের সুলাখালী গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা জিয়াউল হক করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সোনাগাজীর কাফন-দাফন টিমের সদস্য হিসেবে মাওলানা নূর উল্যাহও দাফন কাজে অংশগ্রহন করেন। এতে মসজিদ কমিটি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ১৯ জুন ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহিত দেয়। তিনি মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে তাকে সেখান থেকে জোরপূর্বক বের করে দেয়া হয়।
মসজিদ কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাখাওয়াত হোসেন আলাউল বলেন, মাওলানা নূর উল্যহর বিষয়ে ভুলবুঝাবুঝির কারণে তাকে ছুটি দেয়া হয়েছে। চাকরিচ্যুৎ করার বিষয়টি সত্য নয়। আগামী ২৫ জুন মসজিদ কমিটি, মুতাওয়াল্লী ও মুসলীদের নিয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।
তিনি বলেন, মসজিদ পরিচালনা করেন মুতাওয়াল্লিরা। আমরা সহযোগী মাত্র। মুতাওয়াল্লিদের কাছে একজন আইনজীবী লিগ্যাল নোটিস প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
/এএ