চায়ের দোকানে ধূমপান নিষিদ্ধ হচ্ছে

চায়ের দোকানে ধূমপান নিষিদ্ধ হচ্ছে

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আগে থেকেই নিষিদ্ধ ছিল পাবলিক প্লেসে ধূমপান। এবার পাবলিক প্লেসের তালিকায় চায়ের দোকানকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চায়ের দোকানে বসে চা আর ধূমপান এক সঙ্গে করা যাবে না। নগরজীবনের কফি হাউসকেও বাদ দেওয়া হয়নি। কফি হাউসগুলোর মনোরম পরিবেশে বসেও ধূমপান করা যাবে না।

এসব বদল আনার প্রস্তাব করা হয়েছে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার আইনের সংশোধনীতে। খসড়ায় এসব বিষয় রেখে ২৮টি মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে। মতামতেও এসব বিষয় বহাল রয়েছে বলে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

খসড়া আইনে শুধু সংযোজনই করা হয়নি, বিয়োজনও করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ধূমপান এলাকার বিলুপ্তি। বর্তমান আইনে পাবলিক প্লেসে ধূমপান করার এলাকা নির্ধারণ করে দিতে পারতেন পাবলিক প্লেসের মালিক, তত্ত্বাবধায়ক, নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি বা ব্যবস্থাপক। সংশোধনের জন্য প্রস্তুত খসড়া আইনে এ ধারাটি বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার আইনের ২০০৫ সালের সংস্করণে ই-সিগারেট ছিল না। ২০১৩ সালের সংশোধনীতেও জায়গা হয়নি ই-সিগারেটের। কিন্তু এবার সংশোধনীর খসড়ায় একটা বড় জায়গা দখল করে আছে ই-সিগারেট। এর কারণ হচ্ছে দিন দিন তরুণ-যুবারা ই-সিগারেটে ঝুঁকছেন। তাদের ঝুঁকেপড়া রোধ করতেই এবার ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।

বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে ই-সিগারেটে ক্ষতিকারক কিছু নেই। বরং ই-সিগারেট ধূমপায়ীদের ধূমপান থেকে বের করে আনতে সহায়তা করে। এসব প্রচারণার ফাঁদে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকেই ই-সিগারেটের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন।

ধূমপান নিয়ন্ত্রণ সেলের একজন কর্মকর্তা জানান, ই-সিগারেট এমন একটি ডিভাইস যেখানে নিকোটিন যুক্ত তরল দ্রব্য হিট বা গরম করা হয়। এ ডিভাইস থেকে নির্গত একধরনের অ্যারোসল জাতীয় তরলের শক্ত কণা ফুসফুসের ভেতর প্রবেশ করে। ই-সিগারেটের ডিভাইসে লিথিয়াম ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। এই ব্যাটারিতে লিথিয়াম, তামা এবং অ্যালুমিনিয়ামের মতো খনিজ পদার্থ থাকে। ফলে ই-সিগারেট সেবনে শ্বাসযন্ত্র ব্যবস্থায় ঝুঁকি সৃষ্টি করে। তা ছাড়া সিগারেটের মতোই ই-সিগারেটেও নিকোটিন আছে। এ নিকোটিন তামাক পাতা থেকে নিষ্কাশন করে নেওয়া হয়।

অনেকে মনে করেন উচ্চহারে রাজস্ব পাওয়ার কারণে সরকার সিগারেট নিষিদ্ধ করে না। বাস্তবতা হচ্ছে, নানা কারণে সরকারের পক্ষে সিগারেট নিষিদ্ধ করা সম্ভব নয়। তাই সরকার ধূমপানের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনতে চায়। সরকারের হিসেব অনুযায়ী তামাক জনিত বিভিন্ন রোগে প্রতি বছর দেশে দেড় থেকে দুই লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। অপরদিকে তামাক জনিত রোগব্যাধির কারণে প্রতি বছর ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়। অথচ তামাক থেকে রাজস্ব পায় ২২ থেকে ২৩ হাজার কোটি টাকা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *