চিকিৎসার বাইরে ২৫ শতাংশ হৃদরোগের রোগী

চিকিৎসার বাইরে ২৫ শতাংশ হৃদরোগের রোগী

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: গত দুই দশকে দেশে হৃদরোগের চিকিৎসায় সক্ষমতা বাড়লেও এখনো মোট রোগীর ২৫ শতাংশই চিকিৎসার বাইরে থাকছেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে দেশে ভয়ঙ্করভাবে বাড়ছে হৃদরোগের রোগী। যার ভুক্তভোগী শিশু থেকে বয়স্করা। স্থানীয় পর্যায়ে চিকিৎসার সক্ষমতার ঘাটতি এবং হৃদরোগ প্রতিরোধে সচেতনতার অভাব এর প্রধান কারণ হিসেবেও মনে করেন তারা।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হসপিটালে এক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সোসাইটি অব অ্যাডাল্ট কনজেনিটাল ডিজিজেস, কনজেনিটাল হার্ট ডেস্ক বাংলাদেশ এবং চাইল্ড হার্ট ট্রাস্ট বাংলাদেশ যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে হৃদরোগের চিকিৎসকেরা বলেন, পৃথিবীব্যাপী মোট মৃত্যুর বেশির ভাগই হয় হৃদরোগে। বাংলাদেশে এক সময়ে মরণ এ ব্যাধির চিকিৎসার ব্যাপক সংকট ছিল। তবে এ অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। তবে চিকিৎসার বাইরে এখনো বহু মানুষ।

তারা বলেন, একজন শিশু হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে এটার বোঝা বড় হলেও বইতে হয়, কেবল ছোট বেলায় ঠিকমতো চিকিৎসা না হওয়ায়। এজন্য হৃদরোগ নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।

সেমিনারে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. নুরুন্নাহার ফাতেমা বলেন, জন্মগত হার্টের সমস্যা বড় হলেও থাকতে পারে। আমরা অনেক সময় দেখতে পাই, চিকিৎসা ব্যবস্থা দেশে থাকলেও অনেকে দেশের বাইরে চলে যান। তাই কোথায় কোন চিকিৎসা পাওয়া যায় সেটিও সাধারণ মানুষকে জানানো উচিত। বর্তমানে ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে। কিন্তু ২০ থেকে ২৫ শতাংশ রোগী এখনো চিকিৎসার বাইরে থাকছেন।

তিনি বলেন, জন্মগত হার্টের রোগ অনেক সময় মিস হয়ে যায়। অনেকে জানেই না তারা এটির শিকার হয়েছেন ছোটবেলায়, যা বয়স বাড়লেও থেকে গেছে। এখন হাঁটতে গেলে সমস্যা হয়, সিঁড়ি ভাঙতে পারেন না, এরপর যখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছেন তখন তার হার্টের বড় সমস্যা পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের কাছে এসব জটিলতার চিকিৎসা রয়েছে। বুক কেটে কিংবা না কেটে উভয় চিকিৎসাই রয়েছে।

নুরুন্নাহার ফাতেমা বলেন, দেশে প্রতি হাজারে আট জন শিশু জন্মগত হৃদরোগ নিয়ে জন্ম নিচ্ছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই চিকিৎসার অভাবে মারা যায়। অনেক রোগী গ্রামে থাকে, যারা উন্নত চিকিৎসার জন্য শহরে আসতে পারে না। আবার যাদের অবস্থা একেবারে খারাপ, তারা হাসপাতালে আসার আগেই মারা যাচ্ছে। তবে শিশুদের হার্টের অপারেশনে মৃত্যুঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। তাদের চিকিৎসায় সক্ষমতায় বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে। বেসরকারি দু’একটি প্রতিষ্ঠানে থাকলেও সরকারি তেমন সুবিধা নেই। বিশেষ করে নবজাতকদের ওপেন হার্ট সার্জারি এখনো খুবই সীমিত।

তিনি আরও বলেন, নবজাতকদের ওপেন হার্ট সার্জারি এখনো বিদেশ নির্ভর। সরকারি হাসপাতালে এক বছরের নিচের শিশুদের সার্জারি করার মতো সুযোগ-সুবিধা তেমন নেই। বেসরকারিতে কিছু আছে। হৃদরোগের সব চিকিৎসা সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানে আছে, এটিও এখনো বলা যাচ্ছে না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *