আদালত প্রতিবেদক ● সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে আদায় করা অর্থ তারা ফেরত পাবেন কি না, সে বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত জানা যাবে বৃহস্পতিবার। প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করবে। বুধবার এ মামলার আপিল শুনানি শেষে বিষয়টি বৃহস্পতিবার রায়ের জন্য রাখা হয়। আদালতে ব্যবসায়ীদের পক্ষে শুনানি করেন আহসানুল করিম। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন এম আমীর-উল ইসলাম।
জরুরি অবস্থার সময় আদায় করা ওই অর্থ বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছেই জমা রয়েছে। হাই কোর্ট এ মামলায় ব্যবসায়ীদের পক্ষে রায় দিলেও বাংলাদেশ ব্যাংক তার বিরুদ্ধে আবেদন করলে বিষয়টি আপিলে আসে। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচনকালীন বিতর্কিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা নেয় সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত ফখরুদ্দীন আহমেদের সরকার। জরুরি অবস্থা জারি করে দুর্নীতি দমন অভিযানের কথা বলে গ্রেপ্তার করা হয় দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের। ওই সময়ই ২০০৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০০৮ সালের নভেম্বরের মধ্যে প্রায় ৪০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ওই অর্থ আদায় করা হয়।
২০১০ সালে জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, তত্ত্বাবধায়ক আমলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল প্রায় ১ হাজার ২৩২ কোটি টাকা, যা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা রয়েছে। ক্যাফেলি ডেটেড টি অ্যান্ড ল্যান্ড লিমিটেড এবং এস আলম স্টিল লিমিটেড এ বিষয়ে হাই কোর্টে রিট আবেদন করলে আদালতের রায় তাদের পক্ষে যায়। ২০১০ সালের ২৪ অগাস্ট ওই রায়ে ক্যাফেলি ডেটেড টি অ্যান্ড ল্যান্ড লিমিটেডের ২৩৭ কোটি টাকা এবং এস আলম স্টিল লিমিটেডের কাছ থেকে ৬০ কোটি টাকা নেওয়াকে অবৈধ ঘোষণা করে তিন মাসের মধ্যে ওই অর্থ ফেরত দিতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক এর বিরুদ্ধে আপিল করলে হাই কোর্টের রায় স্থগিত হয়ে যায়। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের অনেকেই জরুরি অবস্থার সময়ে ওই অর্থ আদায়ের সমালোচনা করেছেন বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি গতি পায়নি।