জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ও বনানী কবরস্থানে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ও বনানী কবরস্থানে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ও বনানী কবরস্থানে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর ৪৫তম শাহাদৎ বার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতার স্মরণে নির্মিত জাদুঘরের (পূর্বতন বাসভবন) সামনে রক্ষিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে স্বাধীনতার এই মহান স্থপতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

প্রতিকৃতির বেদীতে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণের পর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ এই বাঙালির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে তিনি সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। বাংলাদেশ সশ¯্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকস দল এ সময় রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়, বিউগেলে করুন সুর বেজে ওঠে। পঁচাত্তরের ১৫ আগষ্ট শহিদদের স্মরণে অনুষ্ঠিত বিশেষ মোনাজাতে এ সময় অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তাঁর তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল এবং শেখ রাসেলসহ পরিবারের অধিকাংশ সদস্য ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট কালরাতে কতিপয় বিপথগামী সেনা সদস্যদের বুলেটের নির্মম আঘাতে শহিদ হন। জাতির পিতার দুই কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা সে সময় বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।

জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধানমন্ত্রী তাঁর মেয়ে, বিশ^ অটিজম আন্দোলনের অগ্রপথিক সায়মা ওয়াজেদ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের জাতির পিতা এবং তাঁর পরিবারের স্মৃতি বিজড়িত ভবনটিতে যান (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর) এবং সেখানে কিছু সময় অবস্থান করেন। যেখানে ’৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট ইতিহাসের বর্বরতম এক হত্যাযজ্ঞ পরিচালিত হয়েছিল।

বনানীতে ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্ট এর অন্যান্য নিহতের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে যান। যেখানে তাঁর মা’ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তিন ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল এবং শেখ রাসেলসহ সেদিনের ঘটনায় নিহত পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সমাহিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদনের পর কবরগুলোতে ফুলের পাঁপড়ি ছড়িয়ে দেন। তিনি সেখানে ফাতেহা পাঠ করেন এবং বিশেষ দোয়ায় শরিক হন।

এরপর সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ ও দলের নেতাকর্মীরা এক এক করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকালে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে সময় যতো বাড়তে থাকে আওয়ামী ও অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীদের শ্রদ্ধায় বনানী কবরস্থানের কবরগুলো ফুলের পাপড়িতে ভরে যায়। কবরস্থানে দলে দলে মানুষ আসে, স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হতে থাকে বনানী কবরস্থান। তবে স্লোগানের পাশাপাশি অনেকেই কবরের সামনে মোনাজাত করছেন, দোয়া পড়ছেন। নিহত সবার জন্য দোয়া করছেন। কেউবা দীর্ঘসময় কবরগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে সূরা পাঠ করছেন। এভাবে সকাল থেকে বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানাতে থাকেন সর্বস্তরের মানুষ।

সকাল ১০টার পরে বনানী কবরস্থানে নেতাকর্মীদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো শেষে নিজেই নেতাকর্মীদের নিয়ে মোনাজাত করেন। এ সময় তিনি নিহতের সবার মাগফিরাত কামনা।

অন্যদিকে সকালে বনানী কবরস্থান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেরিয়ে যাওয়ার পরে একে একে শ্রদ্ধা জানায়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ, ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ উত্তর ও দক্ষিণ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস, শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব, তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ মটর শ্রমিকলীগ, শেখ রাসেল মেমোরিয়াল সমাজকল্যাণ সংস্থাসহ আরও অনেকে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কাল রাত্রিতে ঘাতকের নির্মম বুলেটে নিহত হয়, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, শেখ আবু নাসের, শেখ কামাল, বেগম সুলতানা কামাল, শেখ জামাল, বেগম পারভিন জামাল, শেখ রাসেল, কর্নেল জামিল, আব্দুন নঈম খান, শেখ ফজলুল হক মণি, বেগম আরজু মণি, আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, বেবী সেরনিয়াবাত, আরিফ সেরনিয়াবাত, বাবু সেরনিয়াবাত, শহিদ সেরনিয়াবাত, লক্ষীর মা, সুকান্ত আব্দুল্লাহ বাবুসহ আরও কয়েকজন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *