পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধার অবমূল্যায়ন করে মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষার্থীদের সাথে বৈষম্য মূলক আচরণ করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ ফজলুল করীম মারুফ। এই আচরণ হিংসাত্মক, সাম্প্রদায়িক ও অসংবিধানিক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মাদরাসার শিক্ষার্থীরা বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পলন করেছিলো। তারা স্বাধীনতা যদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছিলো। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় মেধা ও যোগ্যতার প্রশ্নে উত্তীর্ণ হবার পরেও মাদরাসা শিক্ষার্থীরা বর্নবাদী, সাম্প্রদায়িক, পশ্চাৎপদতা ও জুলুমের শিকার হচ্ছে। প্রতি বছরই তাদের সঙ্গে এমন অনৈতিক অাচরণ করা হচ্ছে। জ্ঞান আহরণের মত পবিত্র এ বিষয়টি নিয়ে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণ অসহণীয় ও বেদনাদায়ক।
২০ অক্টোবর’ শনিবার বেলা ৩-টায় জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষার্থীদের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বৈষম্যের প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ ফজলুল করীম মারুফ উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
ইশা ছাত্র আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শেখ মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জনগণের টাকায় পরিচালিত হয়। এখানে সর্বস্তরের জনগণের টাকা আছে। মাদরাসা শিক্ষার্থীরা এই দেশ ও মাটির সন্তান। তাদেরও সবকিছুতেই পূর্ণ অধিকার অাছে। তাদের মেধার মূল্যায়নে এ দেশেরই উপকার। যার জন্য তারা মুখিয়ে অাছে। তাদের প্রতি কোন ধরনের বৈষম্য সহ্য করা হবে না। মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষে দাখিল ও ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের আলিম পর্যায়ে সাধারণ শিক্ষর্থী ও মাদরাসা শিক্ষর্থীদের সিলেবাস এক ও অভিন্ন করে। তাহলে কেন এই বৈষম্য। এই বৈষম্যের কারণে দেশের উন্নতি ও অগ্রগতি ব্যাহত হবে দাবি করেন বলে বক্তারা।
মানববন্ধনে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর সেক্রেটারি জেনারেল এম. হাছিবুল ইসলাম বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা ও মানবিক অনুষদে ভর্তির ক্ষেত্রে ৩৩৭টি আসনের মধ্যে ১৩টি আসন মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষার্থীর জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে, যার মধ্যে আবার মাত্র ২টি আসন ছাত্রীদের জন্য বরাদ্ধ। যা স্পষ্টই নারীদের উচ্চ শিক্ষার অন্তরায়। এমন বৈষম্যমূলক আচরণ কখনোই সুখকর নয়। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
তিনি বলেন, মাদরাসা শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টে রিট করার পরে আদালত জাবিকে বৈষম্য বিলোপের একটি নির্দেশ দিলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সে নোটিশটি আজও কার্যকর করেনি। এটা স্পষ্টই আদালত অবমাননার শামিল।
এম. হাছিবুল ইসলাম বলেন, সাংবিধানের উর্ধ্বে উঠে ভিন্ন কোন আইন ও বৈষম্য সৃষ্টি করার অধিকার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নেই। অনতিবিলম্বে ভর্তি বৈষম্য বাতিল করতে হবে। মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষার্থীদের ভর্তির ব্যাপারে সমান সুযোগ না দিলে প্রতিনিধিত্বকারী ছাত্র সমাজকে নিয়ে অধিকার বাস্তবায়নে কঠিন আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ে জাবি কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করা হবে।
এ সময় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ আল-আমিন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক মুহাম্মাদ জিয়াউল হক জিয়া, কওমি মাদরাসা সম্পাদক ইউসুফ আহমাদ মানসুর, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রিয়াদ প্রমুখ। প্রকাশনা সম্পাদক একেএম আব্দুজ্জাহের আরেফী, কলেজ সম্পাদক জি এম বায়েজীদ, স্কুল সম্পাদক এম এম শোয়াইবসহ অন্যান্য ছাত্র নেতৃবৃন্দ।