জামাতি বক্তা, সাংবাদিক ইলিয়াস ও আহলে হক

জামাতি বক্তা, সাংবাদিক ইলিয়াস ও আহলে হক

জামাতি বক্তা, সাংবাদিক ইলিয়াস ও আহলে হক

আমিনুল ইসলাম কাসেমী : বড় দুঃখের সাথে লিখতে হচ্ছে, একজন জনপ্রিয় আলেমের বিরোধিতা করতে গিয়ে স্টেজে হাজারো জনতার সামনে জুতা প্রদর্শন করলেন। শুধু তাই নয়, জুতা প্রদর্শনের সময় টেবিলের ওপর কোরআন মজিদ বিদ্যমান ছিল।কোরআনের উপরে জুতা উঁচিয়ে কোরআনকে অবমাননার শামিল।

কারো ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে, তাই বলে হাজারো জনতার মনে একজন আলেমকে জুতা দেখানো, আবার কোরআনের অবমাননা করা বড় দুঃখজনক। এ ধরনের বক্তাদের আইনি ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে মনে করি।

জামাত-শিবিরের ভাইয়েরা সব সময় আলেম- উলামার বিরুদ্ধাচারণ করেন। এটা নতুন কিছু নয়। অনেক পুরোনো বিষয়। বহু আলেম লাঞ্ছিত- অপমানিত হয়েছে জামাত-শিবিরের কর্মীদের হাতে। বহু আলেম আক্রান্ত হয়েছেন, আহত হয়েছেন তাদের আক্রমণে। অনেক আলেমের উপর এমন নির্যাতন করেছেন, হসপিটালে থাকতে হয়েছে বহু দিন যাবত। একদম সন্ত্রাসী স্টাইলে নিরীহ আলেমদের ওপর তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছে।

কিন্তু ভরপুর ময়দানে এভাবে আগে কেউ জুতা প্রদর্শন করেননি। এই প্রথম দেখলাম, একজন আলেমকে লক্ষ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, আবার জুতা দেখানো, সেই সাথে কোরআনের অবমাননা।

বড় আফসোস! ইসলামের লেবাস ধারণ করে, ইসলামী পোষাক পরে, ইসলামী দলের নাম ধারণ করে, এভাবে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার আর সন্ত্রাসী মনোভাব নিয়ে আরেকজন আলেমের প্রতি তেড়ে আসা খুবই লজ্জাষ্কর বিষয়।

আমার মনে হয়, জামাতী ভাইয়েরা যে সব কার্যকলাপগুলো করছেন, এটা কোন নাস্তিকের দল সাহস করতে পারবে না। যারা কোন ইসলামী দল করে না, যাদের ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান নেই, তাদেরও এরকম দুঃসাহস হবে না। কিন্তু জামাতি ভাইয়েরা সেটা করে দেখালেন।

জামাত- শিবির যে উচ্ছৃংখল, সেটা আমরা অনেক আগে থেকে জানি, এদেশের আলেম- উলামা এবং রাজনৈতিক বোদ্ধারা ভাল করে জানেন। কেননা, তারা রাজপথে এবং শিক্ষাঙ্গনে যেভাবে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল, সে গুলো সকলের মনে আছে।

এক সময় তো, জামাত- শিবির মানেই সন্ত্রাসী আর দুর্ধর্ষ বাহিনী হিসেবে এদেশের মানুষ জানত। একদম আন্ডার ওয়ার্ল্ড এর মত খ্যাতি ছিল তাদের। দেশের বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে রগ কাটা বাহিনী ছিল তাদের। কত যে ছাত্রের রগ তারা কেটেছে, সেগুলোর হিসাব নেই।

শিক্ষাঙ্গনে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করার পেছনে তাদের সবচেয়ে বেশী অবদান! বহু নিরীহ ছাত্রের উপর তারা হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বহু মায়ের বুক খালি করেছিল।

জামাত- শিবিরের সর্বশেষ ফিরিস্তি দেখেছিলাম, বিগত হরতাল আর অবরোধের সময়, পেট্রোল বোমায় ঝলসে দিয়েছিল শত শত বনি আদমকে। বহু গাড়িতে অগ্নি সংযোগ, বহু জাতীয় সম্পদের হানি করেছিল তারা।

কয়েক বছর তারা একটু চুপ মেরেছিল, প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। কিন্তু বর্তমানে আবার তারা পাখা ঝারা দিয়ে উঠেছে। আলেম- উলামাদের শানে বিষোদগার, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ। এভাবে হেয় করে যাচ্ছে তারা।

ওরা আমেরিকায় এক সাংবাদিক বসিয়ে রেখেছে। ইলিয়াছ তার নাম। তার কাজই হল, রাত দিন আলেমদের শানে বিষোদগার করা। যত আজগুবি কথা, এবং বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন তিনিসাংবাদিক ইলিয়াস ও । বিশেষ করে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র তার সব সময়। হঠাৎ লাইভে এসে আলেম- উলামাদের নিয়ে হাস্য-রস করছেন তিনি।

এরকম বহু অনৈতিক কার্যকলাপের সাথে জড়িত তারা। সর্বশেষ এখন তারা ক্ষিপ্ত হয়েছেন আলেমদের প্রতি। একদম পাগলা কুকুরের ন্যায় তেড়ে আসছেন। বয়োজৈষ্ঠ আলেম- উলামা এবং দ্বীনের দায়ীদের টার্গেট করে তারা সামনে এগিয়ে আসছে।

আরো দুঃখ হয়, কুরআনুল কারীমের অবমাননা। ইসলামের ঠিকাদার সেজে আল কুরআনের অবমাননা কোনদিন জাতি সহ্য করেব না।

শুনেছিলাম, হেফাজতের আন্দোলনের সময় ওরা শাপলা চত্বরে গিয়ে ইলেকট্রিক করাত দিয়ে রাস্তার গাছ কর্তন করেছিল, আবার বায়তুল মোকাররমের ইসলামী বই পুস্তকের দোকানে অগ্নি সংযোগ করেছিল। যাতে বহু কোরআন পুড়েছিল। গতদিনের কোরআন অবমাননা দেখে সেই কথা মনে পড়ে গেল।

আমাদের ওলামায়ে কেরামের সোচ্চার হওয়া দরকার। আর জামাতীদের সাথে কোন ঐক্য নয়। আলেমগণ এক প্ল্যাটফরমে আসুন। জামাতীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। আল্লাহ রহম করুন। আমিন।

লেখক : দারুল উলূম দেওবন্দ-ভারত-এর ফারেগ ও শিক্ষক

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *