জোকোভিচের মতো এমন কিছু করেছিলেন যারা
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ইউএস ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম সেটে ক্যারেনো বাস্তার বিপক্ষে ম্যাচে দুর্ঘটনাবশত লাইন জাজকে বল দিয়ে আঘাত করে বসেছেন জোকোভিচ। আইন অনুযায়ী টুর্নামেন্ট থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে তাঁকে। তবে এমন কা- কিন্তু টেনিস কোর্টে এই প্রথম হলো না।
ডেনিস শাপোলোভ
২০১৭ সালের ডেভিস কাপে গ্রেট ব্রিটেনের কাইল এডমুন্ডের বিপক্ষে নেমেছিলেন কানাডার ১৭ বছর বয়সী ডেনিস শাপোলোভ। দুই সেট হেরেছেন, তৃতীয় সেটও হারের মুখে। মেজাজ খারাপ থাকাটাই স্বাভাবিক, এমন অবস্থায় জোরে বল মারলেন একটা। বলটা সোজা আঘাত করল পাশে থাকা আম্পায়ারের আর্নোঁ গাবাসের বাঁ চোখে। সঙ্গে সঙ্গে নিজের ভুল বুঝতে পেরে গাবাসের দিকে এগিয়ে যান শাপোলোভ, ক্ষমা চান। লাভ হয়নি। অখেলোয়াড়োচিত আচরণের দায়ে ম্যাচ রেফারি ব্রায়ান আর্লি শাপোলোভকে সাত হাজার ডলার জরিমানা করার পাশাপাশি বহিষ্কার করেন।
সৌভাগ্যবশত, গাবাসের চোখের রেটিনা বা কর্নিয়ার কোনো ক্ষতি হয়নি। পরে স্বস্তি প্রকাশ করে শাপোলোভ বলেন, ‘ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, গাবাসের কিছু হয়নি। হলে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারতাম না।’
ডেভিড নালবান্ডিয়ান
২০১২ লন্ডন কুইন্স ক্লাব এটিপি টুর্নামেন্টের ফাইনালে ঘাসের কোর্টে ক্রোয়েশিয়ার মারিন চিলিচের বিপক্ষে নেমেছিলেন আর্জেন্টিনার ডেভিড নালবান্ডিয়ান। প্রথম সেট জিতেছিলেন, দ্বিতীয় সেটে আবার ফিরে আসছিলেন চিলিচ। এই অবস্থায় একটা শট ভালো মতো মারতে পারলেন না নালবান্ডিয়ান। মেরেই বুঝেছিলেন, ভালোমতো মারা হয়নি যে। শট নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেজাজ হারিয়ে নাইকির বিজ্ঞাপনী এক বোর্ডে লাথি মেরে বসেন এই তারকা। সমস্যা হলো, নাইকির ওই বিজ্ঞাপনী বোর্ড লাইন জাজের আসনের চারপাশে পরিবেষ্টিত হয়ে ছিল। লাথিটা তাই বোর্ড ভেদ করে বিচারকের পায়ে লাগে। ব্যস, বিজয়ী হয়ে যান চিলিচ!
টিম হেনম্যান
ব্রিটিশ তারকা টিম হেনম্যান তখন অত বেশি সাফল্য পাননি। ১৯৯৫ উইম্বলডনে পুরুষ দ্বৈতে নেমেছিলেন জেরেমি বেটসের সঙ্গে। চতুর্থ সেট গড়িয়েছিল টাইব্রেকারে, এমন সময় একটা শট মিস করে বসেন এই তারকা। রেগেমেগে হাতে থাকা বল জোরে ছুড়ে মারেন। বুঝতেই পারেননি, মাত্র এক ফুট দূরে ছিলেন বল গার্ল ক্যারোলিন হল। ব্যথার তীব্রতায় চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে হলের। পরে যদিও একটা ফুলের তোড়া আর গালে চুমু এঁকে দিয়ে ক্ষমা চেয়ে নেন হেনম্যান। তবে হেনম্যান-বেটস ; বহিষ্কৃত হয়েছিলেন দুজনই।
জন ম্যাকেনরো
টেনিস কোর্টে সাফল্যের পাশাপাশি বিতর্কও কম সৃষ্টি করেননি জন ম্যাকেনরো। ১৯৯০ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের চতুর্থ রাউন্ডে খেলতে নেমেছিলেন মিকায়েল পার্নফোর্সের বিপক্ষে। প্রথম সেট জিতলেও হেরে বসেছিলেন দ্বিতীয়টায়। তৃতীয় সেটে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন। চতুর্থ সেটে আবার জেতার পথে ছিলেন পার্নফোর্স। এমন অবস্থায় ঘটল বিপত্তি। গোটা ম্যাচ জুড়েই আম্পায়ার, সুপারভাইজার, রেফারিকে গালাগাল করে যাচ্ছিলেন, অসম্মান করছিলেন। এক লাইন্সওম্যানের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করায় আম্পায়ার জেরি আর্মস্ট্রং তাঁকে সতর্ক করে দেন। সে টুর্নামেন্টের আগে নতুন বিধিমালা অনুসরণ করা শুরু করেছিল টেনিস বিশ্ব, যে বিধিমালায় উল্লিখিত ছিল, ‘থার্ড কোড ভায়োলেশন’ করলে খেলোয়াড়কে টুর্নামেন্ট থেকে বের করে দেওয়া হবে। সে অপরাধটাই করেছিলেন ম্যাকেনরো। ব্যস, টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দেওয়া হয় তাঁকে।