জ্বালানির দামে নতুন রেকর্ড পাকিস্তানে

জ্বালানির দামে নতুন রেকর্ড পাকিস্তানে

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম ফের বাড়িয়েছে সরকার। দেশটির ইতিহাসে এই প্রথম পেট্রোল ও ডিজেলের দাম ৩০০ রুপি ছাড়িয়েছে।

বৃহস্পতিবার প্রতি লিটার পেট্রোলের দাম ১৪ দশমিক ৯১ রুপি এবং প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ১৮ দশমিক ৪৪ রুপি বাড়ানোর ঘোষণা দেয় পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের এই ঘোষণার পর শুক্রবার দেশটিতে প্রতি লিটার পেট্রোল ৩০৫ দশমিক ৩৬ রুপি এবং এবং প্রতি লিটার ডিজেল ৩১১ দশমিক ৮৪ রুপিতে বিক্রি হয়েছে, যা প্রথমবারের মতো ঘটল দেশটিতে।

এদিকে যেদিন সরকার জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে, সেই একই দিন ডলারের বিপরীতে রেডর্ক দরপতন ঘটছে পাকিস্তানি রুপির। বৃহস্পতিবার ১ ডলারের বিপরীতে রুপির মূল্যমান ছিল ৩০৫ দশমিক ৬। পাকিস্তানের ইতিহাসে এর আগে ডলারের বিপরীতে রুপির এই পরিমাণ অবমূল্যায়ন ঘটেনি।

বছরে পর বছর ধরে চলা দুর্নীতি-অব্যবস্থাপনার গত কয়েক বছর ধরেই ভঙ্গুর অবস্থা চলছে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে। তবে তা তীব্র রূপ নিয়েছে ২০২২ সালে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডলারের মজুত তলানিতে নেমে যাওয়ায় নিয়ন্ত্রণহীন গতিতে বাড়তে থাকে মূল্যস্ফীতি।

২০১৮ সালে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আইএমএফের কাছে দীর্ঘমেয়াদী ঋণের আবেদন করেছিল পাকিস্তান এবং তা মঞ্জুরও হয়েছিল। ২০১৯ সালে আইএমএফের শর্ত না মেনে জ্বালানি তেলে ভর্তুকি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই সরকার। তার জেরে আইএমএফও স্থগিত করে দেয় ঋণের কিস্তি।

২০২২ সালে ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী হন শেহবাজ শরিফ। ক্ষমতায় আরোহনের পর আইএমএফের স্থগিত ঋণের অচলাবস্থা কাটাতে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করে তার নেতৃত্বাধীন সরকার। সরকারের সার্বিক কার্যক্রম পর্যালোচনা করে অবশেষে গত ৩০ জুন পাকিস্তানকে ৩০০ কোটি ডলার জরুরি (বেইল আউট) ঋণ দিতে সম্মত হয় আইএমএফ।

গত ৯ জুন মেয়াদ শেষ করে বিদায় নেয় শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকার। তারপর ১২ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হন আনোয়ার হোসেন কাক্কার।

পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মূল কাজ নির্বাচনের আয়োজন করা। তবে বর্তমানে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতাসীন, তার জন্য দেশের অর্থনীতিকে সঠিক পথে ফিরিয়ে নিয়ে আসাও বড় একটি চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *