স্বাস্থ্য । সিদরাতুল মুনতাহা
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সচেতন হতে হবে
মানবদেহ যখন রক্তের সব গ্লুুকোজ ভাঙতে ব্যর্থ হয় তখনই ডায়াবেটিস হয়। ডায়াবেটিস হলো এমন একটি রোগ যে রোগে আক্রান্ত হলে ব্যক্তিকে সারাজীবন ধরে তা বয়ে বেড়াতে হয় এবং এ রোগ সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে মৃত্যু সংঘটিত হয়। কোভিড ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধে বাচঁবে জীবন-প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে প্রতিবারের মতো এবার ও আগামী ২৮ শে ফেব্রুয়ারি জাতীয় ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস উদযাপন করা হবে। এর সাথে সাথে প্রতিবারের মতো এবার ও পালিত হবে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির ৬৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৫৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এই সমিতিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। মূলত বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির উদ্যোগে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে জনগনের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রতিবছর জাতীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে এই দিবসটি উদযাপন করা হয়।
বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কিন্তু এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য জনগনের মধ্যে এখনও যথাযথ সচেতনতা সৃষ্টি হয়নি। দেশের বেশির ভাগ জনগণ এই রোগ নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট মনোযোগী নন। অনেকে আবার এটি নিয়ন্ত্রণে সচেতনতার উপায় সম্পর্কে কিছুই জানেন না। যার ফলে ধীরে ধীরে এই রোগ মহামারীর রূপ ধারণ করছে। বর্তমানে বৃদ্ধ ও মধ্যম বয়সী দের সাথে সাথে অল্পবয়সীরাও এই ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর প্রধান কারন হলো দৈনন্দিনের খাদ্যাভাস, নিয়মিত ব্যায়াম, ওজন ঠিক রাখাসহ নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের ক্ষেত্রে জনগনের অসচেতনতা। এছাড়া দেশের বেশিরভাগ মানুষই বড় ধরনের রোগে আক্রান্ত না হলে শারীরিক পরিক্ষা-নিরীক্ষা করতে আগ্রহী নন। এছাড়াও বর্তমান পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে যে, ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেশিরভাগই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে এবং তাদের মৃত্যু ঝুঁকি ও বেশি থাকছে। এই অবস্থায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সচেতন করতে না পারলে দেশে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্তের হার ও মৃত্যুহার উভয়ই আরও বাড়তে থাকবে।
বর্তমানে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু ঝুঁকি কমানোর জন্য জনগনকে সচেতন করে তোলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই রোগে আক্রান্ত বেশিরভাগ ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তা প্রতিরোধ করা বেশি কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই এই ‘ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস’ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে এই রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে হবে। নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা, পর্যাপ্ত ঘুম, সময়মতো ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করা, ওজন ঠিক রাখাসহ নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের মাধ্যমে এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। এই সকল বিষয়ে দেশের জনগণকে সচেতন করে তুলতে পারলেই ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
লেখক : শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়