ডিম আমদানিতে ২৫টির মধ্যে ২৪টি প্রতিষ্ঠানই ব্যর্থ

ডিম আমদানিতে ২৫টির মধ্যে ২৪টি প্রতিষ্ঠানই ব্যর্থ

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ডিম আমদানির জন্য ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র একটি প্রতিষ্ঠান সামান্য পরিমাণ আমদানি করতে সক্ষম হয়। অন্য ২৪টি প্রতিষ্ঠানই আমদানিতে ব্যর্থ হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, আমদানি করা নয়, দাম নিয়ন্ত্রণে আনাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। এদিকে ডিম ও বাচ্চার দাম নিয়ন্ত্রণে পোলট্রি খামারিরা নিজস্ব ১০টি আড়ত গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন।

একমাত্র ডিম আমদানিকারক বিডিএস করপোরেশনের কর্ণধার দিপংকর সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডিম আমদানিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সার্টিফিকেট ইস্যু। আরও ২ লাখ ১০ হাজার ডিম দেশে ঢুকবে। ভারত থেকে আমদানি ও ঢাকায় পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতিটি ডিমে খরচ পড়েছিল ৮ টাকা ৮৭ পয়সা। ডিমের প্রথম চালানে লাভ হলেও ভারতে এক মাস থাকা-খাওয়া বাবদ খরচ তোলা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে সেখানেও ডিমের দাম কিছুটা বাড়তি। এরপরও আমদানি করলে লোকসান হবে না।

প্রথম দফায় ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল চারটি প্রতিষ্ঠানকে। এদের মধ্যে মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার মো. ইয়ার হোসেন বলেন, দামে পড়তা হয়নি। উচ্চমূল্যের ট্যাক্স দিয়ে আমদানি করা কঠিন ছিল। ট্যাক্স কমানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদনও করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ডিম আমদানি করা সম্ভব হয়নি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর চারটি প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। ২১ সেপ্টেম্বর আরও ৬টি প্রতিষ্ঠানকে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর ৮ অক্টোবর তৃতীয় দফায় আরও ৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর আরও ১০টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মাত্র একটি প্রতিষ্ঠান ৬১ হাজার ৯৫০টি ডিম আমদানি করতে সক্ষম হয়েছে। এরপর আর একটি ডিমও দেশে ঢোকেনি।

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন বলছে, সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে ডিম, মুরগি ও বাচ্চার দাম অস্বাভাবিক বেড়েছিল। এই সিন্ডিকেট মূলত তেজগাঁও বাজার থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। তবে সিন্ডিকেট ভাঙতে রাজধানীতে ১০টি আড়ত গড়ে তোলা হচ্ছে। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমিয়ে স্মার্ট পোলট্রিশিল্প গড়া, ফিড ও মুরগির বাচ্চার সিন্ডিকেট ভাঙতে তারা এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানায়।

ডিম আমদানি না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডিম আমদানি নয়, দাম নিয়ন্ত্রণ করাই সরকারের মূল উদ্দেশ্য ছিল; সে কারণে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। আমদানির অনুমোদন দেওয়ার পরই বাজারে দাম কমতে থাকে।

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন জানায়, গত মঙ্গলবার রাজধানীর শনির আখড়ার গোবিন্দপুর বাজারে আড়ত উদ্বোধন করা হয়। পর্যায়ক্রমে কাপ্তান বাজার, তেজগাঁও, কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজার, উত্তরা, মিরপুর, খিলক্ষেত বাজার, রামপুরা বাজার, বাড্ডা ও কামরাঙ্গীরচরে আড়ত গড়ে তোলা হবে।

গতকাল রাজধানীর পাইকারি বাজারে প্রতিটি ডিম বিক্রি হয়েছে ৯ টাকা ৪০ পয়সায়। আর খুচরা বিক্রি হয়েছে ১০ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১১ টাকা ৫০ পয়সায়। তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমানত উল্লাহ বলেন, সাধারণত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে ডিমের দাম কম থাকে। এ সময় বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসবজি, মাছ ছাড়াও হাঁসের ডিমের সরবরাহ থাকে। এ কারণে ফার্মের ডিমের দাম কম থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *