পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের আন্ডারগ্রাজুয়েট (স্নাতক) প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষায় ‘ট্রান্সজেন্ডার কোটা’ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই মানববন্ধন করে তারা। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ট্রান্সজেন্ডার বিরোধী লেখা সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে ট্রান্সজেন্ডার কোটা বিলুপ্তির জন্য বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। পরে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত জাকারিয়া বলেন, হিজড়া এবং ট্রান্সজেন্ডার এক নয়। কিন্তু হিজড়া সম্প্রদায়ের সহমর্মিতাকে কাজে লাগিয়ে ‘বিকৃত মস্তিষ্কের ট্রান্স’দের বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ দেয়া হচ্ছে। একমাত্র কোটা তারাই দাবি করতে পারে যারা সমাজের পিছিয়ে পড়া জাতি। কিন্তু কী যুক্তির ওপরে কোনো ধরণের শারীরিক সীমাবদ্ধতা ছাড়া ট্রান্সজেন্ডার কোটা চালু করা হয়েছে তা বোধগম্য নয়। ট্রান্সজেন্ডারদেরকে কোটা দেয়ার অর্থ হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে এলজিবিটিকে সমর্থন দেয়া।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, হিজড়াদের কোটা থাকা যুক্তিযুক্ত, কিন্তু ট্রান্সদের কোটা দেয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই৷ নিজেদের বিকৃত করে কোটার দাবিদার হওয়া যায় না। ট্রান্স নাম করে পুরুষরূপী মহিলাদের কারণে আমরা মেয়েরা নিজেরাই ভুক্তভোগী হবো। সে আমাদের আবাসিক হলে থাকবে। তার সাথে রুম শেয়ার করতে হবে, যা কোনভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে একজন ট্রান্সমানুষ কখনোই তার শরীরের শতভাগ পরিবর্তন করতে সক্ষম নয়। সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পরিবর্তন করতে পারে। বাকি ৮০ শতাংশই তাদের অপরিবর্তিত থেকে যায়। এক্ষেত্রে আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টা থেকেই যায়। বিদেশে একটি কারাগারে এক অপরাধী তাকে ট্রান্সউইমেন দাবি করায় তাকে মহিলাদের কারাগারে পাঠানো হয়। পরে দেখা যায় ওই কারাগারে তার দ্বারা ৮ জন নারী গর্ভবতী হয়ে গেছে। পরে তাকে পুনরায় পুরুষদের কারাগারে পাঠানো হয়। এরকম যদি হয় একজন পুরুষ আমাদের সঙ্গে হল শেয়ার করবে, রুম শেয়ার করবে-তার দ্বারা আমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। এটা আমরা কখনোই চাই না। এর মাধ্যমে সমকামিতার বীজ আমাদের মাঝে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। আমি মেয়েদের প্রতিনিধি হয়ে বলতে চাই এই কোটার বিলুপ্ত চাই।
ভর্তি পরীক্ষায় ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিলসহ আরও তিন দফা দাবি তোলে শিক্ষার্থীরা। অন্যান্য দাবিগুলো হলো-
ক) দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ‘কলুষিত’ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
খ) ট্রান্সজেন্ডার পরিচয়ধারীদেরকে কোটা ব্যবস্থার আওতায় আনার মাধ্যমে ট্রান্সজেন্ডার মতবাদকে প্রমোট করে সংবিধান ও দেশের আইন পরিপন্থী কাজ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে।
গ) হিজড়া জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বিঘ্নে পড়াশোনা করার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য পর্যাপ্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।