১১ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ২৮শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ২১শে জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : চুয়াডাঙ্গায় গত ২ এপ্রিলের পর থেকে প্রতিদিনই দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে। গতকাল শনিবার (১৫ এপ্রিল) এই জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার (১৬ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় এই জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ আকাশে হালকা মেঘ থাকার কারণে একদিনের ব্যাবধানে তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। আরও কয়েকদিন এই অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক জামিনুর রহমান।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ও জেলা তথ্য অফিসের পক্ষ থেকে অতিপ্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। পর্যাপ্ত পানি পান করতে বলা হচ্ছে। লেবুর শরবত ও সেলাইন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া হিট স্ট্রোক ও ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করতে সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খান। বিভিন্নস্থানে রাস্তার পিচ গলে যেতে দেখা গেছে। তবে এতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে না বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রকাশ চন্দ্র বিশ্বাস।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২১ মে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০০৫ সালের ২ জুন ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১২ সালের ৪ জুন ৪২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৪ সালের ১৩ মে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০০৯ সালের ২৭ এপ্রিল ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রবি মণ্ডল বলেন, মাঠে গবাদি পশুর জন্য ঘাস কাটতে এসেছি। মনে হচ্ছে বাতাসে আগুনে তাপ লাগছে। নাকে-মুখে বাতাস লাগলেই মনে হয় যেন পুড়ে যাচ্ছে। বাতাস নেই বলেই চলে। যেটুকু আছে তাও সহ্য করার মতো না।
শহরের রিকশাচালক আসলাম উদ্দিন বলেন, কয়েকদিন যাবত যে গরম পড়ছে তাতে বাইরে বের হওয়ায় যাচ্ছে না। পেটের তাগিদে বের হচ্ছি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক জামিনুর রহমান বলেন, টানা ১৪ দিন চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হয়েছিল। আজ আকাশে হালকা মেঘ থাকার কারণে অতি তীব্র থেকে কমে তীব্র তাপ প্রবাহে নেমেছে। টানা ১৪ দিন চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সন্ধ্যার পর সারাদেশের আপডেট জানা যাবে। আজও রেকর্ড হলে টানা ১৫ দিন হবে। ঈদের আগে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খান বলেন, সব উপজেলার নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, শহর, গ্রাম-গঞ্জে সব স্থানে মাইকিং করে জনসাধারণকে সতর্ক করা হচ্ছে। তারা যেন অতিপ্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বাইরে বের না হয়। রোজাদারদের সন্ধ্যার পর শরবত, পানি ও ফলমূল বেশি বেশি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। স্ট্রোক, ডায়রিয়াসহ গরমজনিত রোগীদের চিকিৎসায় বিশেষ ব্যবস্থা করার জন্য সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।