তিন্নির মৃত্যুতে উত্তাল ইবি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

তিন্নির মৃত্যুতে উত্তাল ইবি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাবেক ছাত্রী উলফাত আরা তিন্নির রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন তার সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।

শনিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এসব দাবি নিয়ে মানববন্ধন করেন তারা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধনে অংশ নেন।

তাদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে তিন্নি হত্যার বিচার দ্রুত নিশ্চিতকরণে ও সারাদেশে নারীর ওপর সহিংসতা বন্ধের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ।

দুপুরে সংসদের দফতর সম্পাদক পিয়াস পান্ডে স্বাক্ষরিত যৌথ বিবৃতিতে সভাপতি নুরুন্নবী ইসলাম সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক জি কে সাদিক এসব দাবি জানান।

গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার শেখপাড়া এলাকায় নিজেদের দোতলা বাড়ির নিজ কক্ষ থেকে তিন্নিকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পারিবারিক ঝামেলার জেরে দুলাভাই জামিরুল ইসলাম বাড়িতে এসে দুই দফায় হামলা চালিয়ে তাকে নির্যাতন করেন। পরে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

তিন্নি ওই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত ইউসুফ আলীর মেয়ে। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এ মেধাবী ছাত্রী।

তিন্নির স্বজনরাও এ ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছেন। নিহতের চাচা হেলাল উদ্দিন জানান, তিন্নির বড় বোন মিন্নির একই গ্রামের নুরুদ্দীনের ছেলে শেখপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী জামিরুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয়। সংসারে অশান্তি থাকায় প্রায় এক বছর হলো তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে।

এ নিয়ে তিন্নির পরিবারের সঙ্গে জামিরুলের ঝামেলা চলছিল। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে জামিরুল ১০-১২ জনকে নিয়ে তিন্নিদের বাড়ি প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে তারা ফিরে যান। প্রায় দুই ঘণ্টা পর আবারও এসে সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় থাকা তিন্নির ঘরে প্রবেশ করে তার ওপর নির্যাতন চালিয়ে তাকে হত্যা করেন। পরে হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে যায় তারা।

হেলালের দাবি, তার পা খাটের সঙ্গে লাগানো ছিল। এভাবে ঝুললে কেউ মারা যাবে না। তাকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

তিন্নির রহস্যজনক এ মৃত্যুর ঘটনায় আটজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার (২ অক্টোবর) রাতে নিহতের মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ মামলা করেন বলে জানিয়েছেন শৈলকুপা থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) মহসিন হোসেন।

তিনি বলেন, তিন্নির মৃত্যু একটা রহস্যজনক ঘটনা। তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ পেলে সঠিক ঘটনা জানা যাবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শেখপাড়া গ্রামের কনুর উদ্দীনের ছেলে আমিরুল, খলিলের ছেলে নাঈম ও লাব্বিসহ এ পর্যন্ত চারজনকে আটক করেছে। মামলার প্রধান আসামি জামিরুল এখনও পলাতক। তাকেসহ বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *