পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : তুরস্কে মুসলিম ধর্মালম্বিদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআনের সবচেয়ে ছোট পাণ্ডুলিপি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি মাইক্রোস্কোপ ছাড়া পড়া সম্ভব নয়। পৃথিবীতে কুরআনের সবচেয়ে ছোট পাণ্ডুলিপি এটি। এর আগে কুরআনের এমন বিস্ময়কর পাণ্ডুলিপি কোথাও পাওয়া যায়নি।
বিশ্বের সবচেয়ে ছোট এই কুরআনের পাণ্ডুলিপিটি করেছেন ‘নেকাতি কর্কমাজ’।
১৮ অক্টােবর বৃহস্পতিবার তুর্কি গণমাধ্যম ইয়েনিসাফাক তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে একথা জানিয়েছে। দেশটিতে প্রথমবারের মতো ক্ষুদ্রতম শিল্পকর্মের প্রদর্শনী শুরু হয় আয়ডিন প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় কুসাদাসি জেলায়। প্রদর্শনী দেথতে সেখানে এখন জনমানুষের ভিড়। সবচেয়ে বেশী আগ্রহ কুরআনের সবচেয়ে ছোট পাণ্ডুলিপিটিতেই।
ক্ষুদ্রতম শিল্পকর্মের এ প্রদর্শনীতে ক্যালিগ্রাফি আর্টিস্ট নেকাতি কর্কমাজের হাতে লেখা বিশ্বের সবচেয়ে ছোট এই কুরআনসহ বিভিন্ন শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে, যেগুলো খোলা চোখে দেখা অসম্ভব। কর্কমাজ বিশ্বের তিনজন ক্ষুদ্র ভাস্কর্য নির্মাতাদের একজন। তিন বছরে এক সেন্টিমিটার পরিমাপের এই কুরআন তৈরি করেছেন তিনি। একটি সুই বা পিনের মাথায় রাখা সম্ভব এটি। এক্ষেত্রে তিনি চুল দিয়ে তৈরি একটি ব্রাশ ব্যবহার করেছেন। অসামান্য এই কাজের জন্য তিনি রাতকেই বেছে নিয়েছেন।
এর আগে তিনি একটি মশুরির দানায় আল্লাহর ৯৯টি নাম এবং একটি চুলে ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম’ লিখেছিলেন। তখন মিডিয়াতে বিষয়টি আলোচিত হয়েছিল। এবার তারই আরেকটি বিস্ময়কর কাজে রীতিমত মুগ্ধ সবাই। সারা বিশ্বের মিডিয়াতেই এখন পরিচিত মুখ নেকাতি কর্কমাজ।
কর্কমাজ বিশ্বের ক্ষুদ্রতম কুরআনের এ পান্ডুলিপিটি সম্পন্ন করতে সময় নিয়েছেন ৩ বছর। লম্বায় এটি ১ সেন্টিমিটারেরও কম।
এর আগে ২০১৬ সালে গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি খবরে জানা গিয়েছিল, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্র আকারের পবিত্র কোরআন গ্রন্থের সন্ধান মিলেছে বাংলাদেশে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমেই গ্রন্থটির সন্ধান মিলেছে। ২৫৭ পৃষ্টার এই কোরআনের দৈর্ঘ্য মাত্র ১ ইঞ্চি, অর্থাৎ ২ দশমিক ৫৪ সেন্টিমিটার। বায়তুল মোকাররমে হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর জীবনীর উপর মাসব্যাপী তথ্যচিত্র, ক্যালিওগ্রাফি প্রদর্শনীতে ক্ষুদ্রাকৃতির ওই কোরআন প্রদর্শিত হয়। কোরআনের এ কপিটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। রাজধানী উত্তর মুগদা পাড়ার জহির উদ্দিন আহমেদ এটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কাছে হস্তান্তর করেন।
তারও আগে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রাকৃতির কোরাআনের কপিটি ছিল পাকিস্তানের জাদুঘরে। যার দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। এবার পাকিস্তানের ওই রেকর্ডকে ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়লো বাংলাদেশ। কারণ বাংলাদেশে কোরআনের যে কপিটি পাওয়া গেছে তার দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৫৪ সেন্টিমিটার। পাকিস্তানের সেই কোরআনের চেয়ে তা দশমিক ৬ সেন্টিমিটার ছোট।
তবে এবার অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে কর্কমাজ । তুরস্কের আয়ডিন প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় কুসাদাসি জেলায় প্রদর্শিত তার পাণ্ডুলিপিটিই এখন বিশ্বের সবচেয়ে ছোট কুরআনের পাণ্ডুলিপি।