১১ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ২৮শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ২১শে জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : তুরস্ক ও সিরিয়ায় আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা চার হাজার তিন শ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে শুধু তুরস্কেই মারা গেছে দুই হাজার ৯২১ জন। আর সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪৪৪ জনে। দেশ দুটির স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে গার্ডিয়ান।
ইতিহাসের অন্যতম প্রচণ্ড ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে তুরস্ক এবং এর প্রতিবেশী দেশ গৃহযুদ্ধকবলিত সিরিয়া। বলা হচ্ছে, তুরস্কে প্রায় এক শতকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প এটি। গতকাল সোমবার ভোরে ৭.৮ মাত্রার এই ভূকম্পনে নিহতের সংখ্যা সকাল থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল।
কিন্তু এবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) বলছে, এই মৃত্যুর সংখ্যা আট গুণ বাড়তে পারে। ডাব্লিউএইচওর সিনিয়র ইমার্জেন্সি অফিসার ক্যাথরিন স্মলউড বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘আমরা সব সময় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে একই জিনিস দেখতে পাই। দুর্ভাগ্যবশত শুরুর দিকে হতাহতের সংখ্যা যা থাকে, পরবর্তী সপ্তাহে বেশ উল্লেখযোগ্যভাবে তা বেড়ে যায়।’
স্মলউড আরো বলেন, তুষারপাত ও তীব্র ঠাণ্ডার মধ্যে অনেক মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে।
গতকাল সোমবার ভোরে প্রথম ভূমিকম্প আঘাত হানার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর দ্বিতীয়বার শক্তিশালী কম্পন উত্তরে আঘাত হানে। উদ্ধারকারীরা জমে থাকা বরফ এবং ঠাণ্ডার সঙ্গে যুদ্ধ করে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতেই ধ্বংসস্তূপের এই বিশাল পাহাড়ের মধ্যে জীবিতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
এই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে এগিয়ে এসেছে বিশ্বের নানা দেশ। বিশেষজ্ঞদল ও নানা সরঞ্জাম দিয়ে উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তার চেষ্টা করছে নানা দেশ।
তুরস্ক ও সিরিয়া দুটি দেশেই হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে। তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আহত হয়েছেন ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। দেশটিতে অন্তত পাঁচ হাজার ৬০৬টি বহুতল ভবন ধসে পড়েছে।
নিহত অনেক মানুষ যুদ্ধবিধ্বস্ত উত্তর সিরিয়ার বাসিন্দা। এসব এলাকায় লাখ লাখ শরণার্থী তুরস্ক সীমান্তের দুই পাশে শিবিরে বসবাস করছে। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রচুর প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে এরদোয়ান আরেক টুইটে ভূমিকম্পের ভুক্তভোগীদের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, আশা করছি যত দ্রুত সম্ভব আমরা কম ক্ষয়ক্ষতিসহ দুর্যোগটি একসঙ্গে কাটিয়ে উঠব। অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারীদল পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য ইউনিট সতর্ক রয়েছে।
এ ছাড়া এক টুইট বার্তায় এরদোয়ান বলেছেন, ৬ ফেব্রুয়ারি যে ভয়াবহ ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে, সে কারণে সাত দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হলো। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত সারা দেশে ও আমাদের বিদেশি প্রতিনিধি অফিসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলছে, স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের গাজিয়ানতেপ শহরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।