পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলছেন, আমাদের শতভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এবারই প্রথমবারের মতো শতভাগ অনলাইন মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। যাত্রীরা টিকিট প্রদর্শন করেই স্টেশনে প্রবেশ করতে পারবেন। যাত্রার দিনে স্ট্যান্ডিং টিকিট দেওয়া হবে। প্রতিদিন আন্তঃনগর ট্রেনে আসনে ও দাঁড়িয়ে প্রায় ৪৫ হাজার যাত্রী ঢাকা ছাড়বেন। আজ রবিবার দুপুরে ঢাকা (কমলাপুর) রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।
নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘টিকিটবিহীন তথাকথিত যাত্রীদের আর ট্রেন ভ্রমণের সুযোগ নেই। প্রত্যেক যাত্রীকে টিকিট দেখিয়ে স্টেশনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। টিকিটবিহীন যাত্রী প্রবেশ বন্ধে ঢাকামুখী ট্রেনগুলো এবার বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে থামবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ঈদের ছুটি মানুষ যেন আনন্দে পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পারে, এ জন্য রেলওয়ে কর্মচারীদের ছুটি থাকবে না। যাত্রীদের ঈদযাত্রা আনন্দদায়ক করতে ঈদের ছুটি রেলের কর্মচারীরা ভোগ করতে পারেন না।’
শিডিউল বিপর্যয় নিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বেশিরভাগই সিঙ্গেল লাইন কোনো একটি ট্রেনের ১০ মিনিট বিলম্ব হলে অনেকগুলো ট্রেনকে বিলম্বের মুখে পড়তে হয়। তাছাড়া এখনকার আবহাওয়ার তাপমাত্রা অনেক বেশি তাই গতি কম রাখতে হচ্ছে। কাজেই এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে যাত্রী সাধারণকে ধৈর্য ধরতে হবে।’
‘আগামীকাল সোমবার থেকে ট্রেনে ঈদযাত্রা শুরু হবে’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অতীতে বিভিন্ন সময় যাত্রীদের চাপের কারণে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতো। আমরা এবার সে জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। কমলাপুর, বিমানবন্দর, জয়দেবপুর স্টেশনে অস্থায়ী বাঁশের বেড়া নির্মাণ করা হয়েছে, যাতে যাত্রীরা সারিবদ্ধভাবে টিকেট প্রদর্শন করে ঢুকতে পারে এবং টিকেটবিহীন কোনো যাত্রী ঢোকার সুযোগ না পায়।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দুটি প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। এ সময় আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করার জন্য এবং গ্রামের বাড়িতে ঈদ কাটানোর উদ্দেশে কয়েক লাখ মানুষ ঢাকা শহর থেকে গ্রামে আসা যাওয়া করে। পরিবহনের অন্যতম একটি মাধ্যম হচ্ছে রেল। ঈদের সময় যাত্রীদের আসা-যাওয়ার প্রচণ্ড চাপ তৈরি হয়। এই চাপ সামলানোর জন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়ে থাকি এবং বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকি। আমাদের সে পরিকল্পনা আমরা একমাস আগেই মিডিয়ার মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছি।’
‘মন্ত্রণালয় এবং রেলের পক্ষ থেকে যে অভ্যন্তরীণ প্রস্তুতি নেওয়া দরকার আমরা সেটা নিয়ে থাকি’ উল্লেখ করে নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘এ বছর রেলওয়ের সব চেয়ে বড় যে পরিবর্তন নেওয়া হয়েছে তা হলো ঈদের পাঁচ দিন আগে ও ঈদের পাঁচ দিন পরে এই ১০ দিন আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর টিকেট শতভাগ অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ঈদ যাত্রার টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে এবং আগামীকাল থেকে ঈদের ট্রেন চলা শুরু হবে। এই ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি এবং সেগুলো যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণের জন্য আমরা গ্রহণ করেছি। আজকে আমরা কমলাপুর পরিদর্শনে এসেছি সার্বিক প্রস্তুতি দেখার জন্য। এখানে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। যাত্রীদের অধিকতর নিরাপদ যাত্রার জন্য কিছু সিদ্ধান্ত আমরা বিভিন্ন পক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি।’
আগামীকাল সোমবার থেকে ঈদের পূর্ব দিন পর্যন্ত ঢাকাগামী একতা, দ্রুতযান,পঞ্চগড় নীলসাগর, কুড়িগ্রাম, লালমনি ও রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রা বিরতি থাকবে না কারণ এসব ট্রেনে বিমানবন্দর থেকে যাত্রীরা সিট দখল করে থাকে বলে জানান রেলমন্ত্রী।