সড়কে মৃত্যু থামছে না
দুর্ঘটনার কারণগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিন
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : দুর্ঘটনা বাড়ছে বৈ কমছে না। রাস্তাঘাটের কিছুটা উন্নতি হলেও থামছে এই মৃত্যুর মিছিল। বাস্তব কারণ কী এসব মৃত্যুর পেছনে তা চিহ্নিত করার সময় এখনই। কারণ চিহ্নিত করে ব্যবস্থা না নিলে সড়কেও মহামারি রূপ ধারণ করবে। নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর হওয়ার পরও বাংলাদেশের সড়ক-মহাসড়কে বিশৃঙ্খলা রয়ে গেছে। অরাজকতা, যাত্রী ভোগান্তি কমেনি।
কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় দুর্ঘটনা প্রতিরোধ সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। প্রকাশিত খবরে বলা হছে, গত শুক্র ও শনিবার চার জেলায় সড়কে যে সাতজনের প্রাণ ঝরেছে তার পাঁচজনই মোটরসাইকেল আরোহী। রোববার বগুড়ার শেরপুরে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ ছয়জনের প্রাণ গেছে; আহত হয়েছে আরো অন্তত ১৫ জন।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক তথ্য থেকে জানা যাছে, ২০১৫ থেকে ২০১৯-এই পাঁচ বছরে দেশে মোট ২৬ হাজার ৯০২টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩৭ হাজার ১৭০ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে ৮২ হাজার ৭৫৮ জন। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো এবং বিপজ্জনক ওভারটেক বেড়ে যাওয়ার কারণে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে বলে ধারণা করা হয়। সমিতির আরেক প্রতিবেদনে বলা হছে, ২০১৯ সালে পাঁচ হাজার ৫১৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় সাত হাজার ৮৫৫ জন নিহত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে ১৩ হাজার ৩৩০ জন। গত নভেম্বর মাসে দেশে সড়ক-মহাসড়কে ৪৪৩টি দুর্ঘটনায় ৪৮৬ জন নিহত এবং ৭৪১ জন আহত হয়েছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের ‘সড়ক দুর্ঘটনার বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২০’-এ বলা হয়েছে, ২০২০ সালে দেশে চার হাজার ৭৩৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ হাজার ৪৩১ জন নিহত এবং সাত হাজার ৩৭৯ জন আহত হয়েছে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ০.৮৯ শতাংশ বেড়েছে। প্রাণহানি বেড়েছে ৪.২২ শতাংশ এবং আহতের হার বেড়েছে ৩.৮৮ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় ২০২০ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়েছে ১৫.৮৯ শতাংশ এবং প্রাণহানি বেড়েছে ৫৪.৮১ শতাংশ।
প্রতিদিনের এই মৃত্যু কাম্য নয়। এ জন্য সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। দুর্ঘটনা নামের হত্যাকা- রোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। দেশের সড়ক-মহাসড়কে নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে পারলে দুর্ঘটনার হার যেমন কমবে, তেমনি দেশে আহত ও পঙ্গু মানুষের সংখ্যা কমে আসবে। দুর্ঘটনামুক্ত নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।