পাথেয় রিপোর্ট : দণ্ডিত হলেন পাকিস্তানের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। দুর্নীতির দায়ে তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত। আল আজিজিয়া দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে ফ্ল্যাগশিপ দুর্নীতি মামলায় খালাস পেয়েছেন নওয়াজ। খবর পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন ও খালিজ টাইমসের।
বিশ্বজুড়ে পানামা পেপার্স দলিল ফাঁস হওয়ার জেরে এ দুর্নীতির তথ্য প্রকাশিত হয়েছিলো। এ নিয়ে বহু অভিযোগ ওঠায় ক্ষমতা থেকেও সরে যেতে হয় নওয়াজ
শরিফকে।
সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের অ্যাকাউন্টেবিলিটি আদালত উল্লেখিত এ দুই মামলায় নওয়াজের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করে। রায় ঘোষণার সময় ভাতিজা হামজা শাহবাজসহ আদালতে উপস্থিত ছিলেন নওয়াজ শরিফ। পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণার পর এ রায় ঘোষণা করা হলো।
এদিকে দুর্নীতির সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নওয়াজ শরীফ। তার দাবি পাকিস্তানের প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছেন তিনি।
মধ্যপ্রাচ্যে পারিবারিক ব্যবসায় অনিয়মের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় সোমবার নওয়াজ শরিফকে এ কারাদণ্ড দেয়া হয়। রায়ের পর আদালত চত্বরে নওয়াজ শরিফের সমর্থকদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। টিয়ারগ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা চালায় পুলিশ।
লন্ডনে কেনা বিলাসবহুল চারটি ফ্ল্যাটের মূল্য পরিশোধে দেওয়া অর্থের উৎস দেখাতে ব্যর্থ হওয়ার দায়ে (অ্যাভেনফিল্ড দুর্নীতি মামলা) ৬ জুলাই নওয়াজ শরিফকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয় পাকিস্তানের আদালত। তার মেয়ে মরিয়মকে দেওয়া হয় ৭ বছরের কারাদণ্ড। মরিয়মের স্বামী ও নওয়াজের মেয়ের জামাই অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ সফদরকেও আদালত এক বছরের সাজা দেয়। গত সেপ্টেম্বরে নিম্ন আদালতের দেওয়া এ রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের দুই সদস্যের বেঞ্চ। মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত ৫ লাখ রুপিতে নওয়াজ ও তার পরিবারের সংশ্লিষ্ট সদস্যদের জামিন মঞ্জুর করে আদালত।
অ্যাভেনফিল্ড মামলার রায় ঝুলে থাকলেও সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) নওয়াজের বিরুদ্ধে অন্য দুই দুর্নীতি মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে আল আজিজিয়া দুর্নীতি মামলায় নওয়াজকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে আড়াই কোটি ডলার জরিমানা করা হয়েছে। নওয়াজের সম্পত্তি জব্দ করারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আর ফ্ল্যাগশিপ দুর্নীতি মামলায় খালাস পেয়েছেন তিনি। রায় ঘোষণার পর নওয়াজকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই তাকে জেলে স্থানান্তরের কথা। নওয়াজকে আদিয়ালা জেলে না পাঠিয়ে লাহোরের কোট লাখপাত জেলে পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন তার আইনজীবী। অনুরোধ বিবেচনায় নিয়ে তার মেডিক্যাল রিপোর্ট চেয়েছে আদালত।