দৃষ্টিনন্দনে ফ্লোরে বসার ব্যবস্থা

দৃষ্টিনন্দনে ফ্লোরে বসার ব্যবস্থা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আধুনিক সময়েও আমরা এমন কিছু তৈজসকে আমাদের অন্দরমহলে স্থান দিচ্ছি, যা হয়ত কোনো না কোনোভাবে আমাদের শিকড়ের সাথে জড়িত। কোনো একসময় হয়ত আমাদের পূর্বপুরুষরাই এসব ব্যবহার করেছেন; আর আমরাও তার ধারাবাহিকতায় সেই ব্যবস্থাতেই ফিরে যাচ্ছি। যেমন আগেকার দিনে বসার ঘরে মাটিতে টানা মাদুর পাতা থাকত। মেহমান এলে তার ওপরেই পাতা হতো গদি, রঙিন চাদর এবং বর্ণময় বালিশের বিন্যাস। এর অনেক পরে সোফার প্রচলন হয়।

পুরানো যেকোনো জিনিসের প্রতিই আমাদের আত্মার টান একটু বেশি থাকে আর তাই আধুনিক জীবনে আমরা সেগুলোকে নতুন রূপে বারবার ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় রত। সেই প্রচেষ্টার প্রতিফলন হলো লো লাইং সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট।

ছোট অথবা বড় যেকোনো আয়তনের ঘরের অত্যন্ত মানানসই এই সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট। যদিও এখনও অনেকে মনে করেন যে এ ধরনের অ্যারেঞ্জমেন্ট শৈল্পিক দিক থেকে দৃষ্টিনন্দন হলেও আভিজাত্যের দাঁড়িপাল্লায় খুব একটা ভারী নয়। সে ধারণাও ভুল। আসলে বসার ঘর মানেই যে সবসময় মেঝের উপর মখমলের গদি আঁটা মস্ত বড় সোফা হতে হবে তা নয়। শুধু জমকালোভাবে সাজালেই ব্যক্তিত্ব ফুটে ওঠে না।

আপনার ঘরের প্রতিটি দেয়াল মেঝে আপনার যাপিত জীবনের রেখাচিত্রের প্রতিফলন। আর তাই বসার ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে সেই প্রতিফলনের ছাপ থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। যান্ত্রিক সময়ের প্রয়োজনে এখন চলছে হালকা ধরনের আসবাবপত্রের চল। যদি মনে করেন এগুলো অনেক দামি তাহলে ভুল করবেন। লো লাইং সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট করতে মোটেই বেশি খরচ পড়ে না কিন্তু দেখতে লাগে অসাধারণ। এ ধরনের অ্যারেঞ্জমেন্টে আপনি সাবেকি, আধুনিক—দু ধরনের ফার্নিচারই রাখতে পারেন, শুধু খেয়াল রাখতে হবে যাতে দুই ক্ষেত্রেই সামঞ্জস্য বজায় থাকে।

স্টিলের টেবিলের সঙ্গে যেমন বেতের মোড়া মানানসই লাগবে না, ঠিক তেমনি নিচে বসার গদির সাথে উঁচু কাঠের সেন্টার টেবিলও বেমানান। আবার বসার ঘর যেহেতু বাড়ির অন্যান্য ঘরের তুলনায় একটু বেশি গুরুত্বপূর্ণ তাই সেখানে আকর্ষণীয় বিষয়টির সাথে আরামের ব্যাপারটিও চলে আসে। যদি মাটিতে গদি পাততে চান তাহলে অন্তত দুই আড়াই ইঞ্চি মোটা গদি পাতুন। তার সাথে দিন রঙিন চাদর ও বিভিন্ন আকারের কুশন।

চাদরের রং উজ্জ্বল হলেই ভালো, বিশেষ করে ছোট আয়তনের রুমের ক্ষেত্রে, তাহলে রুমটি বড় দেখাবে। নিচের গদির সাথে মিল রেখে রাখতে পারেন লো হাইটের চেয়ার টেবিল। ট্র্যাডিশনাল রাজস্থানি বা গুজরাটি কাজ করা লো হাইটের চেয়ার টেবিলের প্রচলন এখন অনেক বেশি। চাইলে রাখতে পারেন নিচু হাইটের ডিভানও। প্রকৃতপক্ষে, পুরো সাজানোর প্রক্রিয়াটি নির্ভর করছে ঘরের আয়তন ও আপনার পছন্দের ওপর।

শুধু বসার ঘর নয়, এখন তো খাওয়ার ঘরেও এই লো লাইং সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট করা যায়। বলা যায় এখন এটাও হালের ফ্যাশনের তালিকায় বেশ উপরের স্থান দখল করেছে। এতে আপনার ডাইনিং স্পেসটিও অনেক বড় দেখাবে। সময়ের প্রয়োজনে যেমন নান্দনিকতার ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছে ঠিক তেমনি পরিবর্তন এসেছে মানুষের মানসিকতায়। সেই পরিবর্তনের সাথে পা মেলালে প্রশংসার ভাগীদারই হবেন বৈকি!

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *