দেশ-বিদেশে কদর বাড়ছে মুক্তাগাছার রেহালের

দেশ-বিদেশে কদর বাড়ছে মুক্তাগাছার রেহালের

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: প্রতিটি মক্তব ও হেফজখানা মাদ্রাসায় ছাত্রছাত্রীদের পবিত্র কোরআন শরিফ পড়ার জন্য দরকার হয় রেহাল। সাধারণত প্লাস্টিক ও কাঠ দিয়ে তৈরি হয় এগুলো। তবে কাঠের রেহালই বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এমন একটি রেহাল তৈরির কারখানা রয়েছে মুক্তাগাছা উপজেলার গাবতলী বাজারে। এখানকার রেহাল যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

মুক্তাগাছার গাবতলী কওমি মহিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন মাওলানা আব্দুল মালেক। তাঁর মাদ্রাসার ছাত্রীরা পবিত্র কোরআন শরিফ এক সময় পড়ত প্লাস্টিকের তৈরি রেহালে রেখে। তবে এগুলো কিছুটা নিচু করে তৈরি হয়। যে কারণে প্লাস্টিকের রেহালে কোরআন শরিফ রাখলে শিক্ষকদের হাঁটার সময় অবমাননা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিষয়টি আমলে নিয়ে কাঠ দিয়ে রেহাল তৈরির ভাবনা জাগে আব্দুল মালেকের মনে।

প্রথমে কাঠমিস্ত্রি দিয়ে এক-দুটি করে রেহাল তৈরি শুরু করেন আব্দুল মালেক। এরপর ২০১৮ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে রেহাল উৎপাদন শুরু করেন তিনি। এখন তাঁর কারখানায় প্রতিদিন শতাধিক রেহাল তৈরি হয়। ১০ জন কর্মচারী প্রতিদিন কাজ করছেন। তাঁর কারখানার তৈরি রেহাল দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হচ্ছে। দেশের বাইরে সরবরাহেরও স্বপ্ন দেখছেন।

দুই ধরনের রেহাল তৈরি করেন। নকশা ও সাধারণ রেহাল। প্রতিটি নকশা রেহাল বিক্রি করেন ৫২০ টাকায়, সাধারণগুলো বিক্রি করেন ২২০ থেকে ২৮০ টাকা দরে।

কারখানার মিস্ত্রি মোশাহিদুল ইসলাম বলেন, এক সময় দিনে ১০ থেকে ২০টি করে রেহাল তৈরি করতেন। এখন প্রতিদিন শতাধিক বানান তারা। দিন দিন চাহিদা বাড়ছে। তিনি বলেন, সৌদি আরব থেকে বড় অর্ডার পেয়েছিলেন তারা। কিন্তু একসঙ্গে ৫৪ হাজার রেহাল সরবরাহ করা কঠিন বিষয় বলে সে অর্ডার ফেরত দিয়েছেন।

কয়েক দিন আগে সিলেট থেকে রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী আসেন রেহাল কিনতে। এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, প্রতি মাসেই রেহাল কিনতে আসেন তারা। বিকাশের মাধ্যমেও কেনেন।

আব্দুল মালেক জানান, তাঁর আসল উদ্দেশ্য ব্যবসা নয়। পবিত্র কোরআন শরিফের সম্মানের দিকে লক্ষ্য রেখেই রেহাল বানানোর কারখানা দিয়েছেন তিনি। সীমিত লাভে রেহাল সরবরাহ করছেন।

ইউএনও মাহমুদা হাসান বলেন, আব্দুল মালেকের কারখানায় কয়েকটি পরিবারের উপার্জনের পথ হয়েছে। কোনো ধরনের সহযোগিতার সুযোগ হলে করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *