নতুন ইউনিট হচ্ছে পুলিশে সাইবার অপরাধ তদন্ত

নতুন ইউনিট হচ্ছে পুলিশে সাইবার অপরাধ তদন্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক ● দেশে ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীর সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিভিন্ন অপরাধও। ওসব সাইবার অপরাধ তদন্তে গঠিত হচ্ছে পুলিশের বিশেষ ইউনিট ‘সাইবার ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো’। এ ইউনিটটি থাকবে সিআইডির অধীন এবং এর নেতৃত্বে থাকবেন একজন ডিআইজি পদমর্যাদার কর্মকর্তা। ইউনিটটিতে মোট জনবল থাকবে ৫০৫ জন। ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই শেষে ইউনিট গঠনের প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করা যায় আগামী বছরের শুরুতেই পুলিশের ওই ইউনিট সারাদেশে কাজ শুরু করবে।

পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের তথ্যানুযায়ী বর্তমানে দেশে পৌনে ৭ কোটি ইন্টারনেট গ্রাহকের মধ্যে ফেসবুক ব্যবহারকারী আড়াই কোটি। আর সবার জন্য উম্মুক্ত হওয়ায় এ ধরনের ওয়েবসাইটে অপরাধী ও দুর্বৃত্তদের দৌরাত্ম্যও ক্রমাগত বাড়ছে। সম্প্রতি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছে, সারাবিশ্বে তাদের ১২৮ কোটি ব্যবহারকারীর মধ্যে ১০ কোটি অ্যাকাউন্টই ভুয়া। তাছাড়া পৃথিবীর যেসব শহরে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে ঢাকা হচ্ছে দ্বিতীয়। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ফেসবুক ব্যবহারকারী আছেন ব্যাংককে।

সূত্র জানায়, আইসিটি আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা টুইটার আইডি তৈরি করে মূল ব্যবহারকারীকে বিবৃত বা হয়রানি করে এবং তাতে ওই ব্যক্তি যদি আশঙ্কা করেন যে তিনি সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পেশাগত ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন, তাহলে তিনি (ভুক্তভোগী) থানায় জিডি করতে পারেন। সাধারণ ডায়েরি করা থাকলে, কারো নাম ব্যবহার করে কেউ যদি কোনো অপরাধ করে সেজন্য ভুক্তভোগী দায়ী থাকবেন না। এ ধরনের সমস্যায় তথ্য যোগাযোগ ও  প্রযুক্তি আইনে মামলাও করা যাবে। এ আইনের ৫৭ ধারা অনুযায়ী কেউ অভিযুক্ত হলে জামিন অযোগ্য ৭ বছর থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদ- হতে পারে। একইসঙ্গে এক কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানাও হতে পারে।

সূত্র আরও জানায়, এদেশের সাইবার অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েকটি ইউনিট বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে; কিন্তু এখন পর্যন্ত একক ভাবে কোনো ইউনিট তৈরি হয়নি। পুলিশের এ নতুন ইউনিটে যারা কাজ করবেন, তাদের সবার আইটি জ্ঞানসম্পন্ন হতে হবে। এই ব্যুরো কাজ শুরু করলে ফেসবুকে কেউ অপরাধ করতে সাহস পাবে না।

এ প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা) ফারুক আহমেদ জানান, সাইবার ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো ইউনিটটি থাকবে সিআইডির অধীনে। প্রথমে এ ইউনিটের জন্য ৫৭৫ জন জনবলের কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই শেষে জনবল ৫০৫ জন নির্ধারণ করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য গত সপ্তাহে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পাঠিয়েছে। এই ইউনিটের মূল কাজই হলো সাইবার অপরাধ দমন। আশা করা যাচ্ছে অনুমোদনসাপেক্ষে নতুন বছরের শুরুতে ‘সাইবার ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো’ কাজ শুরু করতে পারবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *