নতুন বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের বই উৎসব
সফিউল আযম : শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার। একটি জাতির ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হয়। আর এই বিষয়টি মাথায় নিয়েই বর্তমান সরকার এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে সারাবিশ্বে। বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছে নতুন বই। এই সময়ে সারাদেশে সাড়ম্বরে বই উৎসব পালিত হচ্ছে। নতুন বই শিক্ষার্থীদের জন্য এক অভিনব উপহার।
রানু মা-বাবার একমাত্র সন্তান। লেখাপড়ায়ও খুব ভালো। সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। কিছুদিন হলো বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হলো। রানু অধির আগ্রহে বসে আছে কখন তার হাতে নতুন বই আসবে। অপেক্ষার প্রহর যেন শেষই হচ্ছে না রানুর। সে তার মা-বাবাকে বলে বছর শেষ হতে আর কত দিন বাকি। বাবা তাকে বললেন কেন মা? সে বলল আমি নতুন বই এর অপেক্ষায় আছি। মা-বাবা হেসে বললেন আর কিছুদিন পরেই তুমি তোমার হাতে নতুন ক্লাসের বই পেয়ে যাবে।
বাংলাদেশের মতো দেশে এত বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর মাঝে বই বিতরণ একটি যুগান্তকারী ও সাহসী পদক্ষেপ। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর ২০১০ সাল থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ শুরু হয়। এ কার্যক্রম সারা পৃথিবীতে প্রশংসিত হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট ২৬০ কোটি ৮৫ লাখ ৯১ হাজার ২৯০টি বই বিতরণ করা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০১৮ শিক্ষাবর্ষে ৪ কোটি ৩৭ লাখ ৬ হাজার ৮৯৫ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার ১৬২টি বই বিতরণ করা হয়েছে। মাধ্যমিক স্তরের এক কোটি ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৫৭৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১৮ কোটি ৭৩ লাখ ৮৫ হাজার ৯২১টি এবং প্রাথমিক স্তরে দুই কোটি ১৭ লাখ ২১ হাজার ১২৯ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১০ কোটি ৩৬ লাখ ২৪ হাজার ৪০৫টি বই বিতরণ করা হয়। এছাড়াও প্রাক-প্রাথমিকের ৩৪ লাখ ১১ হাজার ১৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৬৮ লাখ ২৩ হাজার ৬৪৮টি বই; প্রাক-প্রাথমিকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ৫৮ হাজার ২৫৫ জন শিক্ষার্থীর জন্য পাঁচটি ভাষায় এক লাখ ৪৯ হাজার ২৭৬টি বই বিতরণ হয়। আরও উল্লেখযোগ্য হলো দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য ৮ হাজার ৪০৫টি ব্রেইল বই বিতরণ করা হয়।
লেখক : কলামিস্ট ও শিশু গবেষক